নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনসংখ্যা অন্তত ১ হাজার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পুনর্নির্ধারিত আসন সংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আসন সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটি। এ বিষয়ে একটি সুপারিশও প্রণয়ন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘এখন যে সাত হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়, এত শিক্ষার্থী আর ভর্তি করা হবে না। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ছয় হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। শ্রেণিকক্ষে যেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মনোযোগ থাকে—এমন নানা বিষয় বিবেচনায় শিক্ষার্থীসংখ্যা পুনর্বিবেচনার এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আসনসংখ্যার বিষয়ে মতামত বিভাগগুলো থেকেই এসেছে। আজ অনুষদগুলোর ডিনদের সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করলাম। এটি নিয়ে আরও আলোচনা হবে।’
মাকসুদ কামাল বললেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনভিত্তিক উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করবে। শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে পড়াশোনা করবেন, সেই বিষয়ের ওপর তাঁদের দক্ষতা যেন পরিপূর্ণ হয়, তার জন্য সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়াতে হবে। শ্রেণিকক্ষের আকার অথবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষার্থীরা যে অনুপাত হয়, সেই বিবেচনায় আমরা শিক্ষার্থীসংখ্যা নির্ধারণ করব। যেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা বাড়ানো দরকার, সেগুলোতে বাড়ানো হবে। অন্যদিকে যেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমানো দরকার, সেখানে কমানো হবে।’
এর আগে বুধবার (০৫ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডিনস কমিটির এক বিশেষ সভায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আসন সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিনস কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ডিপার্টমেন্টে আসন সংখ্যা কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে একইসঙ্গে কিছু ডিপার্টমেন্টে আসন বৃদ্ধি করারও সুপারিশ করা হয়। যুগোপযোগী শিক্ষা বাস্তবায়নে ঢাবির আসন সংখ্যা পুনঃনির্ধারনের এ প্রস্তাব করা হয়েছে। এ প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনার পর সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হবে।
ডিনস কমিটির সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও বিভিন্ন অনুষদের ডিন উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট ও অনুষদসমূহের চাহিদা/প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হয় এবং ভর্তির যৌক্তিক আসন সংখ্যা নির্ধারণ বিষয়ে সুপারিশ প্রণীত হয়। এই সুপারিশ অনুমোদনের জন্য পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পেশ করা হবে।
শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও যথোপযুক্ত দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা ও সামর্থ্য এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, বাজার চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে মোট আসন সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। যেমন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা আইটি’র (তথ্য প্রযুক্তি) মতো বিষয়গুলোতে ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে। আবার কলা অনুষদের বেশ কিছু বিভাগে অনেক বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সেগুলোও পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
Discussion about this post