নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। গতকাল বুধবার (৫ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এক সভায় সশরীরে ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) রাতে এসব বিষয় নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জাবি প্রশাসন।
এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তার বিস্তার ও নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধের লক্ষ্যে নিচের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে-
১) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাভের পর চিকিৎসা কেন্দ্রে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা আরো বিস্তৃত করা হবে।
২) ক্যাম্পাসে বসবাসকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের রেফারেন্স পত্র নিয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে সরকারি নির্ধারিত ফি দিয়ে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষা করাতে পারবেন।
৩) যে সকল শিক্ষার্থী টিকা নিতে না পারায় হলে আসতে পারছেন না, তারাও একইভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়ে ওই পরীক্ষার ফলাফল জমা দিয়ে হলে আসতে পারবেন।
৪) আপাতত একাধারে সর্বোচ্চ ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য প্রতি হলে আইসোলেশনের ব্যবস্থা রাখা হবে।
৫) এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ যাতে দ্রুত চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন। সে লক্ষ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এর সাথে সমঝোতা স্মারক (MOU) করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
৬) এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল, বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং অফিসে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সুস্থতার দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিস প্রধানকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
৭) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানের বিষয়টি অফিস প্রধান, হল প্রভোস্ট ও বিভাগীয় প্রধানগণ নিশ্চিত করবেন।
৮) আগামী ০৯-০১-২০২২ তারিখ থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাত্ত্বিক ক্লাশসমূহ (উইকেন্ড প্রোগ্রামসহ) অনলাইনে নেয়ার জন্য বলা হচ্ছে। স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে একাধিক গ্রুপ করে ব্যবহারিক ক্লাশসমূহ এবং স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে একাধিক কক্ষে পরীক্ষাসমূহ সশরীরে নেয়া হবে যাতে করে জনঘনত্ব কম হয় এবং সংক্রমণ কমানো যায়।
৯) বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এবং গেইটসমূহের দোকানদার এবং রিক্সাচালকদের অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। এই নির্দেশনা অমান্যকারীদের দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে এবং ক্যাম্পাসে রিক্সা চালাতে দেয়া হবে না।
১০) করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায়-
ক) ক্যাম্পাসে বহিরাগত আগমন নিষিদ্ধ করা হলো। বিশ্ববিদ্যালয়কে পিকনিক স্পট এবং মিলনমেলার স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। রেজিস্ট্রার-কে অবহিত না করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হলো।
খ) আগামী ০৭-০১-২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য পাখি মেলা স্থগিত করা হলো।
গ) আগামী ১২-০১-২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠান সশরীরের পরিবর্তে সংক্ষিপ্তাকারে অনলাইনে করা হবে।
এসব নির্দেশনা করোনাভাইরাস থেকে সতর্কর্তা এবং সকল মূল্যবান জীবন সুরক্ষার জন্য বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
Discussion about this post