অনলাইন ডেস্ক
বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি থেকেই। উদ্যোগ গ্রহণের প্রায় পাঁচ বছর পর পেট্রোবাংলা এই আশার খবর শোনালো। জ্বালানি বিভাগে পাঠানো এক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ফেইজের কাজ শুরু করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রথম ফেইজে ১৩ হাজার ৬০০ কিলেমিটার দ্বিতীয় মাত্রার ভূকম্পন জরিপ করা হবে।
সূত্র বলছে, ২০১২ সালের ১৪ মার্চ মিয়ানমারের কাছ থেকে এক লাখ ১১ হাজার ৬৩১ বর্গকিলোমিটার এবং ২০১৪ সালের ৮ জুলাই ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ পায় ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার। সব মিলিয়ে এক লাখ ৩১ হাজার ৯৮ কিলোমিটারের বিশাল সমুদ্র এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। যা বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের কাছাকাছি। কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলো যখন সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধান করছে তখন আমরা কেবল ঢেউ গুনে দিন পার করছি।
ফলে সমুদ্র বিজয় হলেও এখনও এখানে কী পরিমাণ তেল-গ্যাসের মজুত রয়েছে সে বিষয়ে কোনও ধারণা নেই কারও কাছে। বলা হয়ে থাকে সাগরে অনেক তেল এবং গ্যাসের মজুত রয়েছে। কিন্তু অনুমাননির্ভর এই বক্তব্যের সপক্ষে পেট্রোবাংলার কোনও দালিলিক প্রমাণ নেই। সঙ্গত কারণে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র ডাকলে তাতে সাড়া যথেষ্ট সাড়া মেলে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাগরে একটি দ্বিতীয় মাত্রার জরিপ থাকলেও তেল-গ্যাসের মজুত সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যেত। আর এতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আগ্রহী হতো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে উদ্যোগ নেওয়ার পরও নানা জটিলতার কারণে আটকে ছিল মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভে।
পেট্রোবাংলার তরফ থেকে জ্বালানি বিভাগকে জানানো হয়েছে, আগামী মাস থেকে সার্ভের কাজ শুরু করবে টিজিএস এবং স্লামবার্জার সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কোম্পানি। জানা গেছে, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের জন্য দুদফা দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু দুবারই অনুসন্ধান কোম্পানি স্লামবার্জার সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট কারও পছন্দের কোম্পানি সর্বনিম্ন দরদাতা হতে না পারাতে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান জরিপ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভে কী এবং কেন?
প্রাপ্ত তথ্য বিভিন্ন কোম্পানির ব্যবহারের সুযোগ রেখে যে জরিপ পরিচালনা করা হয় তাই মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভে। এখানেও স্লামবার্জার জরিপ করলে তা বিভিন্ন কোম্পানি ব্যবহার করতে পারবে। তবে এই তথ্যগুলো বহুজাতিক কোম্পানিকে কিনে নিতে হবে। এক্ষেত্রে দুভাবেই জরিপটি পরিচালনা করা যায়। চাইলে সরকার নিজস্ব বিনিয়োগের মাধ্যমে এ ধরনের জরিপ পরিচালনা করতে পারে। আবার নির্দিষ্ট কোম্পানি টাকা দিয়ে জরিপটি করতে পারে। জরিপে পাওয়া ফলাফল বিক্রি করে তারা নিজেরে ব্যয় তুলে নিতে পারে।
কেন এই জরিপ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে একজন কর্মকর্তা বলেন, যদি দ্বিতীয় মাত্রার জরিপ থাকে তাহলে বহুজাতিক যে কোম্পানি এখানে কাজ করতে আসবে তারা এক ধাপ এগিয়ে থাকবে। শুধু মাত্র তারা এসে ওয়েল লোকেসন নির্দিষ্ট করে কাজ করতে পারে। পরে গ্যাস পেলে তৃতীয় মাত্রার জরিপ করে আরো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
Discussion about this post