শুধু তাই নয়, ১০ বছরের পিক্সির আর মাত্র পাঁচ বছর কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। ফলে ১৫ বছর বয়সেই ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে পারে সে। এমনই দাবি পিক্সির মা রক্সি জাসেন্কো-র। গত বছরের ডিসেম্বরে রক্সির এই ঘোষণায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক মহলে। বিশ্ব জুড়ে এক সময় তা শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছিল।
নিশ্চয়ই ভাবছেন, কিসের ব্যবসা করে পিক্সি? তার আগে বলে নেওয়া যাক, এখনও প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পার না করলেও পিক্সির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্ট্রেলীয় ডলারের ছড়াছড়ি।
পিক্সির প্রথম ব্যবসা শুরু হয়েছিল একেবারে শিশু বয়সে। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র দুই বছর। যদিও তার নামে সে ব্যবসা শুরু করেছিলেন পিক্সির মা। ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি নিজেও অত্যন্ত সফল।
সিডনির একটি প্রথম সারির জনসংযোগ সংস্থার সিইও রক্সি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ছোট শিশুদের চুলের সাজসজ্জার জন্য রকমারি জিনিসপত্র তৈরি করাই ছিল তার মেয়ের প্রথম ব্যবসা। তার ব্যবসার নাম হচ্ছে— ‘পিক্সিস বাওস’।
জনসংযোগে অভিজ্ঞ রক্সি যে মেয়ের ব্যবসায় যাবতীয় সাহায্য করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তাই করেছিলেন রক্সি। কিছুদিনের মধ্যেই সে ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছিল। তবে মুনাফার অংক দেখে থেমে থাকেনি পিক্সি।
গত বছরের মার্চে দ্বিতীয় ব্যবসা শুরু করে পিক্সি। এবার শিশুদের খেলনা তৈরির সংস্থা— ‘পিক্সিস ফিজেটস’। প্রথম মাসেই অভাবনীয় মুনাফা। এক মাসেই ২ লক্ষ ডলারের বিক্রি। প্রথম ৪৮ ঘণ্টাতে সমস্ত খেলনা বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। দু’টি ব্যবসাই ‘পিক্সিস পিক্স’ নামে মূল সংস্থার আওতাধীন।
এই বয়সেই খুদে পিক্সির অবসরের পরিকল্পনার কথা জানাজানি হতেই নেটমাধ্যমে সাড়া প়ড়ে গিয়েছে। তবে একেবারেই অবাক হননি রক্সি।
সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারে একটা রসিকতা চালু রয়েছে। আমি ১০০ বছর পর্যন্ত কাজকর্ম করব আর পিক্সি ১৫ বছর বয়সে অবসর নেবে। কে যে স্মার্ট, সে তো বোঝাই যাচ্ছে!’
এই বয়সেই ঝানু ব্যবসায়ীদের মতো কিছু স্বপ্নও রয়েছে পিক্সির। খুদে পড়ুয়ার মা বলেন, ‘পিক্সির অনেক স্বপ্ন রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল সমুদ্রের ধারে একটা বিচহাউস। গ্যারেজে ল্যাম্বরগিনির মতো দামি গাড়ি। অবশ্যই একটা ল্যাম্বরগিনি এসইউভি-র কিনতে চায় সে’।
বিলাসবহুল জীবনের প্রতি আকর্ষণ থাকলেও তার মেয়ের মাথা ঘুরে যায়নি বলে দাবি রক্সির। মেয়ের কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ তিনি।
রক্সি বলেন, ‘আমি ওকে সম্মান জানাই। এই ১০ বছরেই জীবনের অনেকটাই দেখে ফেলেছে ও। তবে এখনও বিনয়ী, দয়ামায়া হারায়নি। বরং মাটির মেয়ে বলতে হবে। বিচহাউস বা ল্যাম্বরগিনির এসইউভি-র মতো বাড়ি-গাড়ির স্বপ্নপূরণে ওকে অনেক খাটাখাটনি করতে হবে। তবে আমার মনে হয়, সে ওই পথেই এগোচ্ছে।’
এই বয়সেই মেয়ে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় খুশি রক্সি। তবে একই সঙ্গে খুদেকে সাবধানও করে দিয়েছেন তিনি। রক্সি বলেন, ‘সাফল্যের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কীভাবে নানা খাতে বিনিয়োগ করা যায়, তা ওকে শেখানো। সেই সঙ্গে এত টাকাপয়সা যাতে নয়ছয় না করে, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’
Discussion about this post