অনলাইন ডেস্ক
সাধারণত ঘড়ির কাঁটায় নানা সংখ্যার মধ্যে দুটি হল ১.৩০ এবং ২.৩০। অথবা দেড়টা বা আড়াইটাও বলা হয়। কিন্তু এই সংখ্যা দুটির বেলার সাড়ে শব্দটা ব্যবহার হয় না, এই বিষয়ে ছোটবেলা থেকেই সবাই জেনে এসেছে। তবে কেন ব্যবহার করা হয় না, তা অনেকেরই অজানা।
৩.৩০টা থেকে বাকি সময় বলার সময় প্রতিক্ষেত্রে ব্যবহার হয় ‘সাড়ে’ শব্দ। কিন্তু আলাদা শুধু এই দুটি ক্ষেত্রে। ছোটবেলা থেকেই একাধিকবার এই প্রশ্ন মনে এলেও তার উত্তর সঠিকভাবে পাননি কেউ।
শুধুমাত্র সময়ের ক্ষেত্রেই নয়, টাকা-পয়সা গণনা বা লেনদেনে এবং অন্যান্য গণনার ক্ষেত্রেও একই কথা বলা হয়ে থাকে। দেড়শ টাকা বা আড়াইশ টাকা, এবং একইভাবে দেড় কিলো, আড়াই কিলো, দেড় মিটার, আড়াই মিটার, দেড় লিটার, আড়াই লিটার ইত্যাদি বলা হয়। কিন্তু সেভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে এই শব্দের ব্যবহার মূলত ভারতীয়রাই করে থাকেন।
আসলে ভারতে দেড়, আড়াই ও ত্রৈমাসিক গণনা পদ্ধতি চালু রয়েছে। এই শব্দগুলি ভগ্নাংশের হিসাব বর্ণনা করে থাকে। প্রাচীন ভারতে এই শব্দগুলি ব্যবহার করে ভগ্নাংশ হিসাব করা হত, যার চল এখনও রয়ে গিয়েছে।
ভগ্নাংশ হল একটি সংখ্যা যা পূর্ণ সংখ্যার একটি অংশ বা অংশকে বর্ণনা করে। অর্থাৎ দুটি পূর্ণ সংখ্যার ভাগফল হল ভগ্নাংশ। যেমন ৩ কে ২ দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় ১.৫। অর্থাৎ ১ এবং ১-এর অর্ধেক। তাই এখানে অর্ধেক অংশটিকে ‘দেড়’ বলে উচ্চারণ করা হয়েছে। ভারতের মতোই বিভিন্ন দেশে ভগ্নাংশ লেখার বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে।
বেশ কিছু পুরনো তথ্য থেকে জানা যায়, প্রাচীনকালে আমাদের দেশে এক চতুর্থাংশ, পৌনে দুই ও আড়াই পর্যন্ত নামতা পড়ানো হতো। সেই ভগ্নাংশগুলি এখনও জ্যোতিষশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়। ভারতে, ওজন এবং সময় ভগ্নাংশে পরিমাপ করা হয়। প্রথম থেকেই ভারতের মৌলিক গণিতের যে শব্দগুলির ব্যবহার করা হয়েছিল তা আজও প্রচলিত রয়েছে অপরিবর্তিতভাবে।
ভাষাবিদরা বলেন, প্রাচীন ভারতে সব থেকে বেশি প্রচলিত ছিল ১-এর অর্ধেক ও ২-এর অর্ধেক অংকের ব্যবহার। তাই তখনকার মানুষ ‘সাড়ে একটা’ এবং ‘সাড়ে দুটো’ শব্দের বদলে শব্দ দ্রুত উচ্চারণ করার জন্য ‘দেড়’ ও ‘আড়াই’ শব্দের সৃষ্টি করেছিলেন।
Discussion about this post