অনলাইন ডেস্ক
কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের বদলে এলএনজি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার। কাজ শুরু হয়নি এমন ১৩টি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করে দেওয়ার পর নতুন এই চিন্তা করা হচ্ছে। তবে এলএনজির সংস্থান কঠিন হওয়ার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকার দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার শুরুতেই কয়লার ওপরে জোর দেয়। এজন্য দেশের মোট বিদ্যুতের ৫০ ভাগ কয়লা থেকে উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সরকারের ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন মহাপরিকল্পনা ২০১০’ পরবর্তী সময়ে সংশোধন করে কয়লা থেকে ৩৫ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এখন রামপাল, পায়রা, মাতারবাড়ি প্রকল্পের বাইরে আর কোনও বিদ্যুৎকেন্দ্রেই জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহার করা হবে না। ফলে ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কী ধরনের বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার হবে, সে বিষয়ে এখনই চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বিকল্প জ্বালানি হিসেবে মূলত এলএনজি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে চিন্তা করা হচ্ছে। সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে অন্তত ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে— বিপুল পরিমাণ জমির সংস্থান। অপরদিকে এলএনজি আমদানিতে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এলএনজির দাম বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে সরকার।
এর আগে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছিলেন, ২০৪১ নাগাদ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তির প্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা পরিবেশের কথা বিবেচনা করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করেছি। কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা তো আছেই, তাই বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে। পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যানের আওতায় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘কয়লার পরিবর্তে এলএনজির কথা যেমন ভাবা হচ্ছে, তেমনই গ্যাস সংকট এবং দামের কথাও আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে। অপরদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে জমি এবং বিনিয়োগ বড় সমস্যা, সেগুলোও বিবেচনা করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটের মতো। কিন্তু ২০৪০ সাল নাগাদ অন্তত ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে বিশাল এই চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যলেঞ্জ বলে মনে করেন এই খাতের সংশ্লিষ্টরা। সৌজন্যে-বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post