অনলাইন ডেস্ক
সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছও এক ধরনের শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমেই যোগাযোগ করে এবং কিছু মাছ প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে এভাবে যোগাযোগ করে আসছে। এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক অ্যারন রাইস বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই জানতাম, কিছু মাছ শব্দ করে। কিন্তু মাছের শব্দকে সবসময় বিরল ঘটনা হিসেবেই ভাবা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, এসব শব্দ কি মাঝেমধ্যে হয় নাকি মাছের মধ্যে শাব্দিক যোগাযোগের একটি বিস্তৃত প্যাটার্ন রয়েছে, সেটি জানা।
মাছের একটি শাখা, রশ্মিযুক্ত মাছের (রে-ফিনড ফিশ) ওপর প্রাথমিক গবেষণা চালান তারা। মেরুদণ্ডী প্রাণীর এই শাখার মধ্যেই বিশ্বের পরিচিত প্রজাতির মাছের ৯৯ শতাংশের অবস্থান।
গবেষকরা মোট ১৭৫টি পরিবার খুঁজে পেয়েছেন যা মাছের প্রজাতির দুই-তৃতীয়াংশ, যারা শব্দের সাথে যোগাযোগ করে বা করতে পারে। মাছের ফ্যামিলি ট্রি পরীক্ষা করে গবেষকরা দেখতে পান, মাছের যোগাযোগে শব্দ এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে গত কয়েক লক্ষ বছরে যোগাযোগের এই ধরন অন্তত ৩৩ বার বিবর্তিত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা তথ্যের জন্য তিনটি উৎস ব্যবহার করেছেন- বিদ্যমান রেকর্ডিং এবং মাছের শব্দ নিয়ে হওয়া বৈজ্ঞানিক গবেষণা; একটি মাছের পরিচিত শরীরস্থান, অর্থাৎ শব্দ করার জন্য তাদের শরীরে যথেষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আছে কিনা; এবং আন্ডারওয়াটার মাইক্রোফোন উদ্ভাবিত হওয়ার আগে ১৯ শতকের সাহিত্যে উল্লেখিত মাছের শব্দ।
গবেষণার সহ-লেখক অ্যান্ড্রু বেজ বলেন, মাছের শাব্দিক যোগাযোগকে প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়। এর কারণ হয়তো, মাছকে সহজে শুনতে বা দেখতে পাই না আমরা। আর পানির নিচে শাব্দিক যোগাযোগের বেলায় বিজ্ঞানও প্রাথমিকভাবে তিমি এবং ডলফিনের ওপরই শুধু মনোযোগ দিয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, মাছেরও কণ্ঠস্বর আছে।
এখন প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে মাছ কী নিয়ে কথা বলে? প্রাণিজগতের প্রায় সকল প্রাণী যে দু’টি বিষয় নিয়ে কথা বলে, সে দুটিই- সেক্স এবং খাবার। রাইস বলেন, মাছেরা হয় কোনো সঙ্গীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে, অথবা খাবারের উত্স বা অঞ্চল রক্ষা করছে, অথবা অন্যদের জানাতে চাইছে সে কোথায় আছে।
Discussion about this post