আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৫ দিন ধরে উদ্ধারকর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টাতেও বাঁচানো যায়নি গভীর কূপে পড়ে যাওয়া মরক্কোর শিশু রায়ানকে। স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১০টার দিকে ১০৪ ফুট গভীর ওই কুয়া থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা যেন হৃদয় ভেঙে দিয়েছে মরক্কোর নাগরিকদের।
১ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়ির কাছের ওই কুয়ায় পড়ে যায় রায়ান ওরাম। তাকে বাঁচাতে ব্যাপক চেষ্টা চালায় উদ্ধারকর্মীরা। প্রথম থেকেই এ ঘটনায় নজর রাখছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
শিশুটির কূপে পড়ে যাওয়ার খবরে মরক্কো ছাড়িয়ে আরব বিশ্ব তথা পুরো দুনিয়াতে তার জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করতে শুরু করেন মানুষ। আরব বিশ্বে টুইটার ট্রেন্ডিংয়ে উঠে আসে ‘সেভ রায়ান’ ও এর আরবি অনুবাদ।
রায়ান ওরাম যেন সুস্থভাবে ফিরতে পারে; সোশাল মিডিয়ায় দেওয়া বিভিন্ন পোস্টে এমন শুভকামনা জানানো হয়। পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনার পাশাপাশি উদ্ধারকারীদের তৎপরতারও প্রশংসা করেছেন অনেকে।
শিশুটির মা আল জাজিরাকে বলেন, ছেলের উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। রায়ানের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ সাইদ বলেন, তারা যা হারিয়েছেন সেটির অনুভূতি বর্ণনা করার মতো শব্দ তার কাছে নেই।
আতিকা আওরাম নামে একজন খালা বলেন, ‘তার জন্য আমার হৃদয়ে ব্যথা অনুভব হচ্ছে।’
ইমাদ ফাহমি নামের রেড ক্রিসেন্টের একজন স্বেচ্ছাসেবক শিশুটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। তিনি বলেন, ‘কয়েক মিনিট অপেক্ষার পর আমি দেখলাম সে অক্সিজেন ব্যবহার শুরু করেছে।’
উদ্ধারকারীরা কূপে রায়ানকে খাবার ও অক্সিজেন মাস্ক পাঠানো এবং তার অবস্থা পর্যালোচনার জন্য একটি ক্যামেরা চালু করতে সক্ষম হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
রায়ানের মৃত্যুর খবরে তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়েছেন মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ।
সোশাল মিডিয়ার ফুটেজে উদ্ধারের পর একটি হলুদ কম্বলে মোড়ানো রায়ানের মরদেহ বেদনাহত করেছে সবাইকে। রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ বলেন, ‘আজ রাতে আমি ছোট্ট রায়ানের পরিবার এবং মরক্কোর জনগণকে বলতে চাই, আমরাও তাদের ব্যথার অংশীদার।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদও শিশু রায়ানের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। সূত্র: আল জাজিরা।
Discussion about this post