খেলাধূলা ডেস্ক
মিশরকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আফ্রিকান নেশন্স কাপের শিরোপা জেতা সেনেগাল এখন উৎসবের দেশে পরিণত হলো। দেশটির রাষ্ট্রপতি ম্যাককি সাল গত সোমবার একদিনের সরকারি ছুটির ঘোষণা পর্যন্ত দিয়ে ফেলেন।
কোনো সন্দেহ ছাড়াই সেনেগালের সেরা ফুটবলারের তকমাটা লিভারপুল তারকা সাদিও মানের গায়েই লেগে আছে। তারপরও দেশটিকে উৎসবে জোয়ারে ভাসাতে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছেন গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডি। ইংলিশ ক্লাব চেলসির এই ফুটবলার ফাইনালের নির্ধারিত সময়ের খেলায় প্রতিপক্ষের দুটি শট প্রতিহত করে জাল অক্ষত রেখেছিলেন।
পেনাল্টি শ্যুট আউটে মোহানাদ লাসিনের শট ঠেকিয়ে সেনেগালের জয়ের সৌরভ ছড়িয়ে দেন মেন্ডি। এরপর সাদিও মানের শটে বল জালে জড়ালে সেনেগাল ট্রফি হাতে উল্লাসে মাতে।
ফিফার ২০২১ সালের বর্ষসেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেছিলেন মেন্ডি। এবার তার হাতে উঠেছে আফ্রিকান নেশন্স কাপের সেরা গোলরক্ষকের খেতাব। অথচ আজকের অবস্থানে আসার আগে তার গল্পটা ছিল বেশ কঠিন ও সংগ্রামমুখর। আজকের অবস্থানে আসার পথে মেন্ডি পাড়ি দিয়েছেন কষ্টের অগ্নিপথ।
ফ্রান্সের চতুর্থ সারির ফুটবল দল চেরবার্গে একসময় খেলতেন মেন্ডি। ২০১৪ সালে কোনো ক্লাবে যাওয়ার ব্যবস্থা না করেই তাকে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি ছেড়ে দেয়।
খেলাটির প্রতি নিজের প্রবল ভালোবাসা ও নিজেকে নিংড়ে দেয়ার কথা এভাবেই ২০২০ সালে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মেন্ডি বলেছিলেন, ‘সেই সময় বেকারত্ব আমার সঙ্গী ছিল। তাই আমি ফুটবলে নিজেকে পুরোপুরি উৎসর্গ করতে পেরেছিলাম।’
‘তারপর আমার মার্সেইতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল এবং সেখানে আমাকে একটি ট্রায়াল দেয়া হয়। শুধুমাত্র সেই ক্লাবে যোগ দেয়ার সুযোগ পাওয়াটা আমার সমস্ত সুযোগ পাওয়ার একটি ঘটনা ছিল। সৌভাগ্যবশত এটি আমার পক্ষে এসেছিল এবং আমাকে স্বস্তি দিয়েছিল।’
মার্সেই বি দলে খেলার পর তিনি রেইমসে যোগ দেন। আর তখনই ২৬ বছর বয়সে তার লিগ ওয়ানে অভিষেক হয়। মেন্ডির পারফরম্যান্স রেইমসের নজর কাড়ে। ক্লাবটিতে এক মৌসুম কাটানোর পর তিনি ২৪ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফারে ২০২০ সালের গ্রীষ্ম মৌসুমে চেলসিতে যোগ দেন।
মেন্ডি যখন চেলসিতে যান, তখন ক্লাবের এক নম্বর গোলরক্ষক ছিলেন কেপা আরিজাবালাগা। তারপর এক পঞ্জিকাবর্ষ যেতেই তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও আফ্রিকান নেশন্স কাপ জয়ী ফুটবলার হয়ে গেছেন।
আফ্রিকান নেশন্স কাপ জয়ের পর ইন্সটাগ্রামে মেন্ডি লিখেছেন,কঠিন পরিশ্রম, ‘ধারাবাহিকতা, ত্যাগ, বিশ্বাস, সমর্থন এবং প্রত্যাশা। আমার দল, স্টাফ, খেলোয়াড়, পরিবার এবং ভক্তদের কাছ থেকে আমি যে ভালোবাসা এবং সমর্থন পেয়েছি, তা ছাড়া আমি এটি করতে পারতাম না। আমরা এক সঙ্গে জিতেছি।’
এক বছরের ভেতর এত অর্জনের পরও অবশ্য মেন্ডির বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ নেই। চেলসির সতীর্থদের সঙ্গে তিনি উড়ে যাবেন আবুধাবি। ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আল হিলালের বিপক্ষে তাকে দলের সঙ্গে থাকতে হবে।
Discussion about this post