ডা. মোস্তফা ইউনুস জাভেদ
সম্প্রতি শমরিতা মেডিকেলের একজন ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। ছেলেটিকে কাউন্সেলিং করা হয়েছিলো, ছেলেটি ব্যাচমেটদের থেকে নিজে আলাদা হয়ে গেছিলো। এমনকি পরের ব্যাচের সাথেও পড়াশোনা কন্টিনিউ করেনি। কেন আত্মহত্যা করেছে, কেউই বলতে পারে না।
গত রাতে নায়ক রিয়াজের শ্বশুর লাইভে এসে আত্মহত্যা করেছেন। সম্ভবতঃ ধানমণ্ডির একটি বিলাসবহুল এপার্টমেন্ট এ তার একা বসবাস। তার সাথে সপ্তাহেও তার সন্তানদের একবার যোগাযোগ ছিল না। ‘পরিকল্পিত পরিবার’ এর সূত্র মেনে এক ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন, কিন্তু নিজের টাকায় কেনা, নিজের টাকা দিয়ে লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে নিজের হাতই হলো তার খুনী! বলুন, কি কি অভাব ছিলো তাদের জীবনে? টাকা-পয়সা? মান-সম্মান? নারী, বাড়ি-গাড়ি? কিচ্ছু না। অভাব ছিল তাদের ধর্মীয় শিক্ষায়, অভাব ছিলো নৈতিকতায়, অভাব ছিলো তাদের সামাজিকতায়, অভাব ছিলো মানুষ হওয়া কিংবা মানুষ করার শিক্ষায়।
মৃত্যুর সময় কালেমা পড়া এক আর আত্মহত্যার সময় কালেমা পড়া এক। কাউকে খুন করার আগে আল্লাহর নাম নেওয়া আর নিজেকে খুন করার আগে কালেমা পড়া একই। এতে বিন্দুমাত্র তফাত নেই। অতএব, সন্তানকে মানুষ করুন, টাকা না দিয়ে। নৈতিক শিক্ষা দিন বিলাসিতা না দিয়ে। যেই ধর্মের-ই হোন, সেই ধর্ম পালন করুন মন-প্রাণ দিয়ে।
আমাদের যিনি স্রষ্টা (আল্লাহ/ভগবান/গড), তিনিই আমাদের আইন পাঠিয়েছেন। সেই আইন বাদ দিয়ে নিজের বুদ্ধিমতো আইনে চলতে গেলে, কখনোই সফল হবেন না। উপরের আত্মহত্যা থেকে এর বাইরে আর কোনো শিক্ষা নেই। ভুলেও ভাববেন না, যে এই আত্মহত্যার জন্য নিঃসঙ্গতা দায়ী। এই নিঃসঙ্গতার পিছনের কারণ বের করুন। নিঃসঙ্গ অনেকেই, সবাই আত্মহত্যা করে না, সবাই তা চিন্তাও করে না। শুধু তারাই করে, যাদের নৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক শিক্ষা নেই।
কেউ যদি আত্মহত্যা করে, তবে আল্লাহর দোহাই, তার প্রতি বিন্দুমাত্র সিম্প্যাথি দেখাবেন না। আপনার সামান্য সিম্প্যাথি প্রদর্শনের জন্য যদি অন্য কেউ আত্মহত্যায় উদ্বুদ্ধ হয়, তবে সেজন্য আপনি জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে।
লেখক- ৫৩ তম এমবিবিএস, রামেক। ইন্টার্নাল মেডিকেল অফিসার, সাপ্পোরো জেনারেল হসপিটাল।
Discussion about this post