বিনোদন ডেস্ক
‘সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের নিদর্শন হিসেবে মারমা ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র গিরিকন্যা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে’। মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মারমা ভাষায় নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে এমনই বললেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের মারমা সম্প্রদায়কে নিয়ে এই প্রথম একটি কাহিনি নির্ভর চলচ্চিত্র নির্মিত হলো। বাংলাদেশের মানুষের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের অনন্য নিদর্শন হিসেবে মারমা ভাষার এই চলচ্চিত্র ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। আমি এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ভীষণ উৎসাহিত হয়েছি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চাকমা ভাষায় এবং সাঁওতাল ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করার জন্য আমি উদ্যোগ নেবো।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ভাষা ও বর্ণমালা সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৭ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজ নিজ মাতৃভাষার বই পুস্তকে লিপিবদ্ধ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বই হিসেবে বিতরণ করে আসছে। সপ্তাহে একদিন পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে নিজ মাতৃভাষার এসব বই পড়তে ও জানতে নিজস্ব বর্ণমালা শেখানো হচ্ছে।’
আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন দেশের খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ড. মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, ‘মাতৃভাষার জন্য আমাদের জাতি জীবন দিয়ে জয়ী হয়েছে এবং বিশ্ববাসীর মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার প্রেরণা যুগিয়েছে। প্রযোজক ডা. মং উষা থোয়াই ও পরিচালক প্রদীপ ঘোষ একটি নজির সৃষ্টি করেছেন।’
‘গিরিকন্যা’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক ও কাহিনিকার বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মং উষা থোয়াই তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি ছাত্র জীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনে রাজপথে লড়াই করেছি। পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে আমরা গণজাগরণ তৈরিতে মাঠে ছিলাম। চিকিৎসাবিদ্যা গ্রহণ করে দেশে ফিরে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পেশাগত জীবন কাটিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ আমাকে অনুপ্রাণিত করে।’
গিরিকন্যা চলচ্চিত্রের পরিচালক, নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ চলচ্চিত্রটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্রদান করে বলেন, “এই চলচ্চিত্রে কোন তারকা শিল্পী নেই। আছে পাহাড়ের মানুষের ভালবাসা, প্রকুতি প্রেম আর দৃঢ়তা। মারমা জনগোষ্ঠীর প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার অঙ্গিকার নিয়ে মারমা ভাষায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘গিরিকন্যা’। বাংলাদেশে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর ভাষাকে রক্ষা করতে আমরা আরও চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছি।”
Discussion about this post