খেলাধূলা ডেস্ক
নবম বারের মতো ইংলিশ লিগ কাপ (কারাবাও) জিতল লিভারপুল। নির্ধারিত নব্বই মিনিট ও অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটের খেলা গোলশূন্য সমতায় থাকায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই বাজিমাত লিভারপুলের। ২২ শটের টাইব্রেকারে চেলসিকে ১১-১০ গোলে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম ঘরোয়া শিরোপার স্বাদ পেল লিভারপুল।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, সুযোগ নষ্টের মহড়া শেষে খেলা গড়াল পেনাল্টিতে। সেখানেও রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে বসেছিল দুই দল। একটা-দুটো নয় ২২টা পেনাল্টি নিতে হলো দুই দলের সমতা ভাঙতে৷ তাতে শেষ হাসিটা হাসল কোচ ক্লপের লিভারপুল। চেলসিকে ১১-১০ ব্যবধানে হারিয়ে ১০ বছর পর জিতল ইংলিশ লিগ কাপের শিরোপা।
ম্যাচের আগের পরিস্থিতিটা চেলসির জন্য মোটেও সুখকর ছিল না, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে যার মালিকানায় ছিল ক্লাবটা, সেই রোমান আব্রামোভিচ ‘দায়িত্ব’ ছেড়েছিলেন আগের রাতে। মালিক রুশ হওয়ায় কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি দলটিকে। তার মধ্যেই নেমে পড়তে হয়েছে লিগ কাপের ফাইনালে।
ম্যাচেও পড়েছে এর ছাপ। বলের দখল, প্রতিপক্ষ গোলমুখে আক্রমণ সব দিক থেকেই যে পিছিয়ে ছিল দলটি। লিভারপুল ছড়ি ঘুরিয়েছে শুরু থেকেই। তবে গোলমুখে একের পর এক সুযোগ নষ্টের মহড়া সাজিয়ে বসেছিল দলটি। যা-ও জোয়েল মাতিপের কল্যাণে একবার বল জড়িয়েছিল জালে, সেটাও বাতিল হয়েছে ফাউলের দোষে দুষ্ট হয়ে।
নির্ধারিত সময়ে গোল বাতিল অবশ্য চেলসিরও হয়েছে। কাই হ্যাভার্টজের হেডার জালে জড়ানোর পর চেলসি জেনেছে, বিল্ড আপে ছিল এক অফসাইড, তাতে গোল আর পাওয়া হয়নি। খেলাটা তাতে অবধারিতভাবেই গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেই সময়ও একবার রোমেলু লুকাকু, আরেকবার হ্যাভার্টজের গোল বাতিল হয়েছে সেই একই কারণে৷ এর আগে পরে দুই গোলরক্ষকের দুর্দান্ত কিছু সেভও গোলের দেখা পেতে দেয়নি ওয়েম্বলিতে হাজির সত্তর হাজারের কাছাকাছি দর্শককে।
পেনাল্টিতে গড়ানোর একটু আগে চেলসি কোচ টুখেল এদুয়ার্দ মেন্দিকে তুলে গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগাকে নামান মাঠে। এই তুরুপের তাসই গেল বছর ইউরোপিয়ান সুপার কাপের টাইব্রেকারে জিতিয়েছিলেন দলকে, সেই একই কৌশলে এবার লিগ কাপটাও জিততে চেয়েছিলেন তিনি। তবে তা আর হয়নি।
পেনাল্টি শুট আউটে সালাহদের একটা শটও ঠেকাতে পারেননি কেপা। তবে তার সতীর্থরাও মিস করেননি একটি শট। খেলা গড়ায় সাডেন ডেথে, সেখানেও তিনি শট ঠেকাতে ব্যর্থ, টানা ১১ ব্যর্থতার পর নায়ক হওয়ার সুযোগ এসেছিল চেলসির ৭০০ কোটি টাকা দামের এই গোলরক্ষকের সামনে৷ তবে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন সেখানেও। নিজের শটটা রাখতে পারেননি লক্ষ্যেই। তাতেই শিরোপার উল্লাসে ফেটে পড়ে লিভারপুল, আর চেলসি শিবিরে নেমে আসে হতাশা।
হারের পর আক্ষেপ বাড়ারই কথা চেলসির। ম্যাসন মাউন্টের দুটি সুর্বণ সুযোগ হাত ছাড়ার পাশাপাশি তিনটি গোল বাতিল হয়েছে অফসাইডে। তবে ম্যাচে থাকতে বড় অবদান ছিল তাদের গোলকিপার এডওয়ার্ড মেন্ডিরও। দুর্দান্ত কিছু সেভে দলকে রক্ষা করেছেন। একই ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে লিভাপুলকেও। ফলে পুরো ম্যাচেই জমজমাট এক ফাইনাল মঞ্চস্থ হয়েছে।
Discussion about this post