নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাসের কারণে দেশের খেটে খাওয়া মানুষের কথা কমবেশি সবারই জানা। তবে রাজধানীর বৃদ্ধাশ্রমগুলোর খবর ক’জনেরই বা জানা। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিদের উদ্যোগে চলা এসব বৃদ্ধাশ্রমের কষ্ট যেন আরো বেশি। লকডাউনের ফলে কোন সাহায্য জুটছে না তাদের।
তবে এ এটিও নজর এড়াতে পারেনি করোনার শুরু থেকেই অসহায়, গরীবদের কাছে হাতেম তাই বনে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানীর। অনাহারে থাকা এমন একটি বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবতার এই ফেরিওয়ালা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর কল্যাণপুরের চাইল্ড কেয়ার ও বৃদ্ধাশ্রমের ৮০ জন সদস্যের জন্য ১০০ কেজি চাল, ৫০ কেজি ডাল, ১৪ কেজি চিনি, আলু, তেল, লবন, ৭২টি সাবান এবং নগদ অর্থ দিয়েছেন গোলাম রাব্বানী।
সারা জীবন সাধারণ মানুষের সেবা করে তাদের পাশে থাকতে চাই জানিয়ে রাব্বানী বলেন, গতকাল বিকেলে একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল দিয়ে কল্যাণপুরে স্বামী-স্ত্রী মিলে একটা চাইল্ড কেয়ার ও বৃদ্ধাশ্রম চালানোর কথা জানতে পারি। সেখানে কোন সরকারি সাহায্য নেই, এই লকডাউনে কেউ খোঁজ নেয় না। পরে খোঁজ নিয়ে তাদের জন্য ১০০ কেজি চাল, ৫০ কেজি ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ও নগত অর্থ সহায়তা দিয়েছি।
ডাকসু জিএস বলেন, সন্তান পরিত্যক্ত অসহায় বাবা-মায়ের দৃষ্টির শূন্যতা আর কষ্টের কথা শুনলে চোখের পানি আটকাতে পারবেন নাহ! কলেজ শিক্ষক, ডাক্তার, উচ্চশিক্ষিত, অনেক সম্পদের মালিক ছিলো, অথচ শেষ বয়সে সন্তানরা আর দায়িত্ব নেয় না, খোঁজ নিচ্ছে না। অসহায়দের কাছে তাদের জীবনী শুনে চোখে পানি চলে আসে।
গোলাম রাব্বানী বলেন, বৃদ্ধদের মধ্যে এক মায়ের পাঁচ সন্তান (৩ মেয়ে, ২ ছেলে) লন্ডন প্রবাসী, আর মাকে এক রাস্তায় ফেলে চলে গেছে, আরেক অসুস্থ বাবাকে পুরান ঢাকার বড় ব্যবসায়ী সন্তান বাড়ি লিখে নিয়ে কাওরানবাজার বরফ কলে ফেলে রেখে গেছেন, গাইবান্ধার এক বৃদ্ধ মায়ের জমি নিজেদের নামে লিখে নিয়ে মাকে ত্যাগ করেছে দুই অভাগা ছেলে। প্রায় প্রত্যেকেরই রয়েছে এমন হৃদয় বিদারক করুণ কাহিনী।
রাব্বানী আরও বলেন, সারা দেশের বৃদ্ধাশ্রমগুলোর একই অবস্থা। সুযোগ থাকলে সব এলাকার বৃদ্ধদেরই সহযোগিতা করতে চাই। দেশের এমন ক্রান্তিকালে সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
Discussion about this post