শিক্ষার আলো ডেস্ক
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ শিক্ষার্থীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার (৫ মার্চ) একাডেমিক কাউন্সিলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর দিনভর আলোচনা শেষে বিকেলে এমন সিদ্ধান্ত হয়। পরে সাংবাদিকদের কাছে লিখিতভাবে বিস্তারিত তুলে ধরেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসান, ফায়াদুর রহমান আকাশ, তামান্না তাসকিন, সুনীতি কুমার দাশ, সানবীম খান, মহিদুল হক, তানভীন হাসান, কাশফী তাবরীজ, বাপ্পু কর্মকার এবং সাখাওয়াত হোসেন সিফাত। বহিষ্কারের মেয়াদ অনুযায়ী ওই সময়ে তারা ছাত্রাবাসেও থাকতে পারবেন না।
জানা যায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি সার্জারি বিষয়ের মৌখিক ও ব্যবহারিক চলাকালীন সময়ে সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ডিএসবির একজন সদস্যের সামনে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকেন। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী সরকার দলীয় ছাত্রদের ফেল করান।’ ময়মনসিংহ মেডিকেলের ৫৩ ব্যাচের ছাত্র এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানের অধ্যক্ষ বরাবর দায়ের করা এমন লিখিত অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তাকে তিন বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়।
অপরদিকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভের সত্যতা না পাওয়ায় এবং ডা. কালামের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় শিক্ষার্থী ফায়াদুর রহমান আকাশ, তামান্না তাসকিনকে দুই বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, মানববন্ধনে স্বেচ্ছায় অংশ গ্রহণের জন্য সুনীতি কুমার দাশ, সানবীম খান, মহিদুল হক, তানভীন হাসান, কাশফী তাবরীজ, বাপ্পু কর্মকার এবং সাখাওয়াত হোসেন সিফাতকে এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়াও অনিচ্ছাকৃতভাবে মিছিলে অংশ গ্রহণ করায় আটজনকে মুচলেকা দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে এম-৫৩ ব্যাচের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে একদল শিক্ষার্থী। যদিও এ ব্যাপারে লিখিত কোনো অভিযোগ পাননি কলেজ অধ্যক্ষ। এমনকী খুঁজে পাওয়া যায়নি ভুক্তভোগী ছাত্রীকে। এরই প্রতিবাদে ২৭ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অধ্যাপকের সম্মানহানি করায় দোষীদের বিচার দাবিতে আন্দোলনে নামেন কলেজের সর্বস্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে পাঠদান বন্ধ রাখেন শিক্ষকরা এবং শিক্ষার্থীরাও যোগ দেননি ক্লাস-পরীক্ষায়। এরআগে, শিক্ষকদের এক সভা থেকে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
Discussion about this post