নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, সততার সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছি। শনিবার (০৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম নগরীর চারুকলা ইন্সটিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, আমি মরে যেতে পারি কিন্তু অন্যায় করব না। আমি অসম্ভব কনফিডেন্ট। আমি কোনো অসংগতি করিনি। যদি অন্যায় প্রমাণিত হয় সেটা যেই হোক না কেনো তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।
সম্প্রতি ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগে অর্থ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের নিয়োগ বোর্ড সম্পূর্ণ সততা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে আসছে। এক্ষেত্রে অর্থ লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই। শুধু একজন ব্যক্তি সুকৌশলে নিয়োগপ্রার্থীদের ফোন করে তা রেকর্ড করেন, যা সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৯০০ শিক্ষক। আমি কয়েকটি নিয়োগও দিয়েছি। কিন্তু কোনো প্রশ্ন ওঠেনি এর আগে। আমি এই ঘটনায় (ফোনালাপ ফাঁসে) বিব্রত। আমার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা দোষীদের খুঁজে বের করব এবং শাস্তির আওতায় আনব। আমরা দুদকের মাধ্যমে এর তদন্ত চাই, দুদকের তদন্তে আরও গভীরে যাওয়ার অবকাশ আছে।
অপরাধী কাউকে প্রশাসন ছাড় দেবে না উল্লেখ করে ড. শিরীণ আখতার বলেন, অভিযোগ উঠার সঙ্গে সঙ্গে আজকের সিন্ডিকেট স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা, এবং সততার স্বার্থে নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরুপে বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহাকারী খালেদ মিসবাহুল মোকর রবীনকে তার পদ থেকে সরিয়ে অন্য বিভাগে এবং হিসাব নিয়ামক দপ্তরের ৩য় শ্রেণির কর্মচারী আহমেদ হোসেনসহ দুই জনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়া ঘটনাটি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী মূলহোতাদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সেলিনা আক্তার, প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া এবং সহকারী প্রক্টরবৃন্দ।
এর আগে গত ৩ মার্চ ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির পদে ১২ লাখ, চতুর্থ শ্রেণি পদে ৮ লাখ, অফিসার পদে ১৫ লাখ ও শিক্ষক নিয়োগে ১৬ লাখ টাকার ওপরে লেনদেন হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
Discussion about this post