শিক্ষার আলো ডেস্ক
বাংলাদেশ থেকে মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এতে যে শুধু সম্পদ ও পুঁজি চলে যাচ্ছে তা নয়, মানবিক সম্পদও চলে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পরে যে তরুণ শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন তারা অনেকেই বিদেশে চলে গেছেন আর ফেরত আসেননি। মেধাবীরা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতে পারে। দেশে মেধার বিকাশ ঘটানোর পরিবেশ যেন তৈরি হয় সে কাজে মনোযোগী হওয়া অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের একটা বড় কর্তব্য।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পথযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি নয় বছর ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ ছিলাম। সেই নয় বছর দেশে সামরিক শাসন ছিল। তখনও কিন্তু ছাত্র সংসদ ছিল। তারপর যখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এলো তখন থেকে আশ্চর্যের বিষয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন থেমে গেলো। ছাত্র সংসদের নির্বাচন ছিল উৎসব। সেখান থেকে মেধাবীরা বেরিয়ে আসতো। মেধাহীন ছাত্ররা কখনো নির্বাচিত হতে পারতো না। চৌকস ছেলেরা নেতৃত্বে আসতো।
শিক্ষাব্যবস্থার কিছু ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মাতৃভাষার মাধ্যমে যে অবৈতনিক শিক্ষা চালু করার চেষ্টা করেছিলাম সেটা পারিনি। তার একটি কারণ হলো আমরা বই লিখতে পারিনি। সেই সাথে অনুবাদও করতে পারিনি। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলোর অনুবাদ করা দরকার। কিন্তু এই কাজটি সবাই করতে পারবে না। এটি একটি সমবায়ী কাজ। অনেকে মিলে করতে হয়, পরামর্শ করতে হয়।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিকতা শিখিয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয় সহমর্মিতা শিখিয়েছে, আর্তমানবতার জন্য কাঁদতে শিখিয়েছে। একাত্তর সালে আমরা দেখেছি এই বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে পাকিস্তানকে তাড়িয়েছিল।
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়; গুণগত উৎকর্ষ যেন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থাৎ গবেষণা, প্রকাশনা ও অনুবাদ এই তিনটি কাজকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেবল গবেষণা নয় গবেষণাকে হতে হবে সৃজনশীল, উপকারী। তবে খুব বেশি করে দরকার হচ্ছে অনুবাদ।
Discussion about this post