শিক্ষার আলো ডেস্ক
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) অত্যাধুনিক জিনোম সিকোয়েন্স ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন এটি উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার মধ্যে প্রথম এবং একমাত্র অত্যাধুনিক ল্যাব। এর মাধ্যমে মানুষ, প্রাণী কিংবা উদ্ভিদের যে কোনও ধরনের রোগের কারণ ও জীবন রহস্যও উন্মোচন করা যাবে।
আজ রবিবার (১৩ মার্চ) বিকালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির এই ল্যাব উদ্বোধনের কথা রয়েছে। একইসঙ্গে মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্ময় বঙ্গবন্ধু স্মারকগ্রন্থের মোড়কও উন্মোচন করবেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্ব খাতের প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত ল্যাবে রয়েছে পিসিআর, আরটিপিসিআর, ডাটা অ্যানালাইজড, ডিএনএ/আরএনএ নির্ণয়, খাদ্য কিংবা উদ্ভিদে হেভি মেটাল নির্ণয় (আর্সেনিক, মেলামাইন), ডিজিজ ডায়াগনোস্টিক ইউনিট, ফুড নিউট্রিশন অ্যান্ড কেমিক্যাল অ্যানালাইসিস ইউনিট, মেটেরিয়াল সায়েন্স ইউনিট, সেল অ্যান্ড টিস্যুচালকার ইউনিট, ফোর আইআর ল্যাব। এই ল্যাবে যে কোনও জীবাণু, ছত্রাক, ফাঙ্গাস, ব্যাকটেরিয়া বা যে কোনও ধরনের অনুজীব যেগুলো মানুষ, প্রাণী কিংবা উদ্ভিদের রোগ সৃষ্টিকারী তাদের জীবন রহস্যও উন্মোচন করা যাবে।
এতে করে তাৎক্ষণিকভাবে রোগের চিকিৎসা দেওয়া যাবে। একইসঙ্গে মানুষ, প্রাণী কিংবা উদ্ভিদের যদি কোনও অপরিচিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায় তাও অল্প সময়ের মধ্যে নির্ণয় করা যাবে। খাদ্যে যেমন আর্সেনিক, মেলামাইনসহ হেভি মেটালের উপস্থিতি নির্ণয় করা যাবে। একইসঙ্গে খাদ্যে পুষ্টি উপাদান নির্ণয় করা যাবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াসিন প্রধান বলেন, প্রতি বছরেই একটি বিভাগের কমপক্ষে ৬০ জন শিক্ষার্থীকে কোনও না কোনও কিছুর জিনোম সিকোয়েন্স করতে হয়। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ল্যাব ছিল না। অন্য ল্যাব থেকে প্রতিটি জিনোম সিকোয়েন্সে খরচ হতো ২৫-৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ একটি বছরে বিভাগের শিক্ষার্থীদের খরচ হতো কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা। এমনিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের বছরে খরচ হতো তিন কোটি টাকা। ল্যাব হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এই টাকারও সাশ্রয় হবে। একইসঙ্গে তারা হাতে কলমে খুব দ্রুত সময়ে শিক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল পাবে। যা তাদের অর্জিত জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মামুনুর রশিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকে আর্ন্তজাতিক মানে উন্নীত করতে এই ল্যাবটি স্থাপন করা হয়েছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। এটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদত্ত ডিগ্রির অ্যাক্রিডিটেশনের জন্য অপরিহার্য। এখান থেকে লব্ধ জ্ঞান চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন প্রক্টর প্রফেসর ড. মামুনুর রশিদ।
Discussion about this post