শিক্ষার আলো ডেস্ক
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) আদলে ‘শিক্ষক নিয়োগ কমিশন’ গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। সমিতির পক্ষ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবিও জানানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- আসছে ঈদুল ফিতরের আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো পৃথক বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দেওয়া, পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালুকরণ এবং তা চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদান এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা। এছাড়া স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল যথাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম গ্রেডে দেওয়া, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু, শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করা, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং শিক্ষদের বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়ক ডিভাইস দেওয়া।
একইসঙ্গে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ, শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সব বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি-২০১০ এর দ্রুত বাস্তবায়নেরও দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা মাত্র ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পান। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনা চিকৎসায় মারা যান।একই কারিকুলামের অধীন সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়ণের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে পাহাড়সম বৈষম্য।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ২৩ মার্চ সারাদেশে জেলা সদরে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহ-সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার ও বেগম নূরুন্নাহারসহ শিক্ষক নেতারা।
Discussion about this post