শিক্ষার আলো ডেস্ক
গত বছরের ভুল সংশোধন করে পুনরায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় মত দিয়েছেন ১৯টি সাধারণ ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। তবে গুচ্ছের ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নেতৃত্ব দেয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে কিনা মতামতের জন্য সময় চেয়েছে।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত গুচ্ছের এক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা সশরীরে ও কয়েকজন ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আজ শুক্রবার ( ১৮ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছের উপাচার্যদের সভায় এবিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সকাল থেকে এ সভা শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর আড়াইটার পর। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা স্বশরীরে সভায় উপস্থিত থাকলেও কয়েকজন ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক।
দেশে প্রথমবারের মতো ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে শুরুতে বেশ জনপ্রিয়তা পেলেও এ পদ্ধতি ধীরে ধীরে আস্থা হারাচ্ছে। মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
সিলেকশন প্রক্রিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আলাদা আলাদা আবেদন ফি, ভর্তিতে ধীরগতি, আর্থিক ক্ষতি নিয়ে মনঃক্ষুন্ন ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকরা। তারা বলছেন, প্রথম থেকেই গুচ্ছ কমিটির একের পর এক হটকারী সিদ্ধান্তে অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া সরাসরি প্রয়োগ করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদা আলাদা ভর্তির তারিখ দেয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনিশ্চিয়তা থাকায় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পরে তা বাতিল করে পুনরায় ভর্তিতে আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়েন অনেকে। ভর্তি বিলম্বের কারণে অনেক শিক্ষার্থী জাতীয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়ে যান। যে কারণে শিক্ষার্থী সংকটে ভুগে গুচ্ছের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এখনো অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০-২০২১ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি।
সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জানিয়েছেন, গুচ্ছের গতবারের সংকটগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গুচ্ছ থাকবে নাকি আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, সংকট সমাধান কীভাবে করা যায় এসব বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকীরা গুচ্ছে থাকতে চেয়েছেন। অন্তত আরও একবার তারা গুচ্ছভুক্ত হয়ে পরীক্ষা আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক গুচ্ছের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলছেন, গুচ্ছ কমিটি ভর্তি পরীক্ষায় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ধরে রাখার জন্য নিজস্ব পদ্ধতিতে ফেরার বিকল্প নেই।
এসব বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা গুচ্ছে থাকার পক্ষে মত দিয়েছেন। গতবারের ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়ে এগুতে চান তারা। তবে আমরা গুচ্ছে থাকা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেই নি। আমরা বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও শিক্ষক সমিতির সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো।
সভা শেষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাড়া বাকি ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবারের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যে থাকছেনা তা নয়, তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমরা রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে গুচ্ছ পদ্ধতিতে গিয়েছি সেজন্য এ বিষয়ে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন আহমেদ এ বিষয়ে উদ্যোগ নিবেন।
Discussion about this post