জোসনা জামান
দেশের ৪৩ জেলায় ২৫ হাজার নারী পাবেন প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ। পাবেন ল্যাপটপও। এজন্য ‘শি পাওয়ার প্রকল্প: প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫০ কোটি ২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম নিরাপদ ব্যবহার করে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও উদ্যোক্তা হিসেবে তাদের টেকসই ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, দেশের ৪৩টি জেলার সদর উপজেলাসহ মোট ৩টি করে উপজেলা এবং রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা অর্থাৎ ৪৪টি জেলায় মোট ১৩০টি উপজেলায় তথ্য প্রযুক্তিতে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ৪টি ক্যাটাগরিতে মোট ২৫ হাজার ১২৫ জন নারীকে ৫ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে এক মাসব্যাপী মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ২টি ও ৪৪টি জেলায় একটি করে সর্বমোট ৪৬টি সেমিনার আয়োজন ও প্রচার করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের জন্য ভিশন-২০৪১ ঘোষণা করেছে। এ জন্য বাস্তবায়নের একটি অন্যতম উপায় হলো দেশের সকল মানুষের দোরগোড়ায় আইসিটি সেবা পৌঁছে দেওয়া। যেহেতু দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, তাই দেশকে এগিয়ে নিতে অর্থনীতিতে নারীর সম্পৃক্ততা জরুরি। আইসিটিতে দক্ষতা, সক্ষমতা, সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করে নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব। আইটি খাতে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে নারীরা চাইলে ঘরে বসেও আয় করে স্বাবলম্বী হতে পারে। এই খাতে নারীদের আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
এ জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর প্রস্তাবিত ‘শি পাওয়ার প্রজেক্ট: সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফর উইমেন থ্রো আইসিটি’ প্রকল্পটি একনেকে ২০১৭ সালের ২ মে মোট ৮১ কোটি ৮৯ লাখ ৫৪ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৭ সালের ১ জুলাই হতে ২০১৯ সালের ৩০ জুন বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ হাজার ৫০০ জন নারীকে ফ্রিল্যান্সার, আইটি সেবাদাতা ও কল সেন্টার এজন্ট এই তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ২৬ হাজার ৩২৫ জনের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি অনুদান, ১৩২ জনমাস কনসালটেন্সি, ২৯ হাজার ৪৮৪টি শিক্ষা ও শিক্ষা উপকরণ প্রস্তুতি, প্রচার ও বিজ্ঞাপন, ৬ জন আউটসোসিং, কম্পিউটার সফটওয়্যার ও ডাটাবেজ তৈরি এবং অফিস ভবন ভাড়া ইত্যাদি।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম নিরাপদ ব্যবহার করে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীদের অত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। উদ্যোক্তা হিসেবে তাদের টেকসই ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে গড়ে তুলতে প্রকল্পটি ভুমিকা রাখবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদন যোগ্য।
সুত্র- সারাবাংলা. নেট
Discussion about this post