স্পোর্টস ডেস্ক : মনে হয় যেন সে দিনের ঘটনা। এখনও যেন কানে ভাসে চৌধুরী জাফরউল্লাহ শরাফতের সেই ধারাভাষ্যটি। কিন্তু দেখতে দেখতে কেটে গেল ২৩টি বছর। ১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিল মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালামপুরের কিলাত কেলাব মাঠে কেনিয়াকে হারিয়ে আইসিসির সহযোগীদের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ১৯৯৭ সালের আজকের দিনে কুয়ালামপুরে টাইগারদের প্রথম বিজয় কেতন উড়েছিল । কোয়ার্টার ফাইনালে হল্যান্ড, সেমির যুদ্ধে স্কটল্যান্ড আর ফাইনালে কেনিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৪- টানা পাঁচ বার ওই আইসিসি ট্রফিতে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন নিয়ে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিবার ফিরে এসেছে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা নিয়ে। অবশেষে ১৯৯৭ সালে দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন হয় পূর্ণ।
আজ সেই ১৩ এপ্রিল। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সোনার হরফে লেখা দিন। ১৯৯৭ সালে এই দিনেই আইসিসি ট্রফি জিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন, আমিনুল ইসলামরা। সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে আগেই বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া বাংলাদেশ দল আইসিসি ট্রফি জিতে অবসান ঘটায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে কেনিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের ক্ষণটি চিরস্মরণীয় হয়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। ১৯৯৭ সালের আজকের দিনে (১৩ এপ্রিল) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালামপুরের কিলাত কেলাব (মালয়েশিয়ার ক্লাবকে কেলাব বলে) মাঠে মরিস ওদুম্বে, স্টিভ টিকোলো, টমাস ওদেয়ো, টনি সুজি, আসিফ করিমদের কেনিয়াকে দুই উইকেটে হারিয়ে আইসিসি ট্রফি জিতেছিল আকরাম-বুলবুল-নান্নুদের বাংলাদেশ। এক বলে এক রান দরকার থাকা অবস্থায় মিডিয়াম পেসার হাসিবুল হোসেন শান্তর প্যাডে লেগে আসা লেগ বাই থেকে জয় সূচক রান পায় বাংলাদেশ।
‘আমি চৌধুরী জাফর উল্লাহ বলছি, মালয়েশিয়ার কিলাত কেলাব মাঠ থেকে। জয়ের জন্য আর দরকার এক বলে এক রান।’ রেডিওতে সেই অবিস্মরণীয় জয়ের মুহূর্তটি মুহূর্তের মধ্যে প্রতিধ্বনিত হয় সারা বাংলাদেশে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া- সারা বাংলাদেশ মেতে ওঠে অবিস্মরণীয় জয়ে খুশিতে। স্বপ্নের বিশ্বকাপ, বাস্তব হয়ে দেখা দেয়। আইসিসি ট্রফি হাতে আকরাম খানের হাসি মুখ হয়ে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন। আকরাম, বুলবুল, নান্নু, দুর্জয়, সুজন, পাইলট, রফিক, শান্ত, সাইফুল, মনি, আতাহাররা বনে যান জাতীয় বীর।
সেদিনের মালয়েশিয়ার আইসিসি ট্রফি জয়ের ২৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো অমলিন সেদিনের স্মৃতি। অনেকেই সেই ঐতিহাসিক দিনের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আকরাম-বুলবুল-নান্নুদের হাত ধরে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেয় লাল-সবুজের পতাকা। বিজয়ের সেই মুহূর্তগুলো যেন এখনো অমলিন। এখনো রঙিন।
বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম লেখানোয় সেই সব জাতীয় বীরদের দেয়া হয় বড় ধরনের সংবর্ধনা। জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সব বীরদের ৫ কাঠা জমি ও একটি করে গাড়ী উপহার দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে সারা ঢাকা শহর সেই জয়ের ট্রফি নিয়ে বিজয়ী দল প্রদক্ষিণ করেছিলো যা আজও অনেকের স্মৃতি হয়ে আছে।
প্রিয় পাঠক! সেদিনের বুনো উল্লাসে শামিল হতে নীচের ভিডিওটিতে সংযুক্ত হোন-
Discussion about this post