তানভীর তানিম
ইতিহাস গড়েছেন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও ভার্জিন গ্যালাকটিকের গভর্মেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট সিরিশা বান্দলা। চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে তিনি ব্রিটিশ ধনকুবের ও উদ্যোক্তা রিচার্ড ব্র্যানসনের সঙ্গে মহাকাশ ভ্রমণ করেছেন। এ ঘটনাকে ‘অবিশ্বাস্য’ ও ‘জীবন পরিবর্তনকারী’ অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন ৩৪ বছর বয়সী এই নারী।
অন্ধ্র প্রদেশের গুন্টুরের বাসিন্দা, বান্দলা ব্রিটিশ বিলিয়নিয়ার রিচার্ড ব্র্যানসন ও অন্য চারজন ক্রুর সঙ্গে ভার্জিন গ্যালাকটিকের স্পেসশিপটু ইউনিটিতে যোগ দেন। তারা নিউ মেক্সিকোর মোজাভ মরুভূমিতে স্পেসপোর্ট ফ্যাসিলিটি থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এই ফ্লাইটে তাকে নভোচারী নম্বর ০০৪ এ মনোনীত করা হয়। এখানে তার ভূমিকা ছিল গবেষক হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন করা। স্পেসশিপের বাকি ক্রু সদস্যরা ছিলেন দুই পাইলট ও তিনজন ক্রুমেট।
ছোট থেকেই মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন দেখা বান্দলা হতে চেয়েছিলেন পাইলট কিংবা মহাকাশচারী। কিন্তু দুর্বল দৃষ্টিশক্তি তার স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বান্দলা বলেন, আমি মহাকাশচারী হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ঐতিহ্যগতভাবে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)-তে যোগ দিতে পারিনি। পরবর্তীতে মহাকাশে যাওয়ার খুব অপ্রচলিত একটি উপায় ব্যবহার করি। আমি বিশ্বাস করি, অনেক লোক এই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হবে এবং সে জন্যই আমরা এখানে আছি।
কল্পনা চাওলা এবং সুনিতা উইলিয়ামসের পর বান্দলা তৃতীয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী যিনি মহাকাশে পাড়ি জমালেন। এছাড়া উইং কমান্ডার রাকেশ শর্মা একমাত্র ভারতীয় নাগরিক যিনি মহাকাশে ভ্রমণ করেছেন। প্রাক্তন ভারতীয় বিমানবাহিনীর এই পাইলট সোভিয়েত ইন্টারকোসমস প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ৩ এপ্রিল, ১৯৮৪ এ সোয়ুজ টি-১১-এ চড়েছিলেন।
বান্দলা মহাকাশে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা লঞ্চটির লাইভ টেলিকাস্ট দেখেছিল। তার দাদু অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ড. রাগাইয়া জানান, শুরু থেকেই তিনি আকাশের প্রতি মুগ্ধ ছিলেন। বান্দলা সম্পর্কে তিনি বলেন, সিরিশা খুবই সাহসী। সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়েও অসম্ভব শক্তিশালী। ছোট থেকেই তার মহাকাশ নিয়ে আগ্রহ ছিল।
মাত্র ৪ বছর বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন বান্দলা। ২০১১ সালে স্কুল অফ অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্স, পারডু ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ও ২০১৫ সালে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসায় প্রশাসনের উপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
Discussion about this post