নিজস্ব প্রতিবেদক
অনুমতি পেলেও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারেনি এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মামলার কারণে বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাময়িক অনুমতির মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনবিহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাসহ নেওয়া ব্যবস্থার বিষয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
গত ১০ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের কাছে পৃথক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা পাঠানোর জন্য বলা হয়। সূত্র জানায়, ১২ বছর পার করে দেওয়ার পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তর করতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ডিসেম্বরের পর ছাড় দেওয়া হবে না। তাঁদের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হবে, অনুমতিও বাতিল হবে।
ইউজিসি বলছে, ২০১৬ সালে অনুমতি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও এখণো শুরু করেনি শিক্ষা কার্যক্রম। ২০১৮ ও ২০২০ সালে অনুমতি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। অনুমোদন নিয়েও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেনি চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। সেগুলো হলো ২০২০ সালের ১৬ জুন ঢাকার জন্য অনুমতি পাওয়া মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, ২০১৮ সালে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠার অনুমতি পাওয়া শাহ মখদুম বিশ্ববিদ্যালয়, ২০১৬ সালের ৭ জুন নারায়ণগঞ্জের জন্য অনুমতি পাওয়া রূপায়ন-একেএম শামসুজ্জোহা ইউনিভার্সিটি এবং ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল রাজশাহীর জন্য অনুমতি পাওয়া আহ্ছানিয়া মিশন ইউনিভার্সিটি।
আদালতে মামলা-মোকদ্দমার কারণে ইউজিসি বন্ধ রেখেছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হলো ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান বাংলাদেশ (আমবান) ইউনিভার্সিটি, দি কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ও কুইন্স ইউনিভার্সিটি। তবে আইনের ফাঁক-ফোঁকরে এগুলো চলার তথ্য রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউজিসি।
ইউজিসি থেকে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর ১২ বছর পেরিয়ে গেছে, এখনও পুরোপুরি স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ২২টি।এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষা কার্যক্রম নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থান্তান্তর করতে হবে। না হলে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের বাইরের অন্যান্য ভবন বা ক্যাম্পাস অবৈধ বিবেচিত হবে।
এই ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো- দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস ও আশা ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, এই ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয় তালিকা চেয়েছে, দেওয়া হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সরকার থেকে পরিচালনার অনুমতি নিয়েও বছরের পর বছর চালু করছে না। কী কারণে এবং কেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে না, তা সরকার জানতে চায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে সাময়িক অনুমতি দেওয়া হয়। পুরোনো আইনে পাঁচ ও পরের আইনে সাত বছর সময়সীমা। ১২ বছর পার করেও যারা নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হয়েছে, চাওয়া হয়েছে তাদের তালিকাও।
Discussion about this post