নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ছিল ৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। এ বছর বরাদ্দ বেড়েছে ৫৫৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় এই প্রস্তাব করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনমিতিক মুনাফাকে কাজে লাগাতে সরকার মানসম্মত কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করছে। কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ১২ বছর আগে ১ শতাংশের কম ছিল, তা বর্তমানে ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২২ শিক্ষাবর্ষে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ১৩৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে ষষ্ঠ হতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রি-ভোকেশনাল কোর্সে ২৬ হাজার ৮৪৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে এবং নবম শ্রেণিতে ২০ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। করোনা অতিমারির বর্তমান পরিস্থিতি এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে ‘ব্লেন্ডেড শিক্ষা বিষয়ক মহাপরিকল্পনা’ প্রণয়ন বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ডেভেলপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬০ জন শিক্ষককে ই-কোর্স তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাক্রমের মূল টেকনোলজি এবং মূল টেকনোলজির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ইমার্জিং টেকনোলজিগুলোয় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সরকারি চাকরিপ্রাপ্তি বিষয়ক সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের সুযোগ বিবেচনায় টেকনোলজিগুলো পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। ডুয়েল সার্টিফিকেশন কার্যক্রম চালু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা অধিদফতারাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ১২ হাজার ৬০৭টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। ১০০টি উপজেলায় ১টি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (টিএসসি) স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার ৮০০টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার মান বাড়াতে ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপন, সিলেট, বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন, ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে ১টি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন, ৮টি বিভাগীয় সদরে ৮টি মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন ইত্যাদি প্রকল্পগুলো আগামী অর্থবছরেও চলমান থাকবে।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার সার্বিক উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। দেশের ৬৫৩টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ৩২২টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ হাজার ৮০০টি মাদ্রাসার নতুন ভবন নির্মাণ, মাদ্রাসা শিক্ষকদের শিক্ষণ দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট-এর মাধ্যমে ৩ হাজার ২২৫ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান, বিভাগীয় পর্যায়ে ৮টি আঞ্চলিক মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয় স্থাপন, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় ‘মাদ্রাসা শিক্ষা ভবন’ নির্মাণসহ নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’
Discussion about this post