নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেটে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ২৯০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তলিয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বন্যার পানির কারণে এখানকার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
জেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গকুল চন্দ্র দেবনাথ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ২৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
সিলেটে বৃষ্টি ও ঢল এখনো অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে পানি আরও বেড়েছে। এরই মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার বেশির ভাগ এলাকাই পানিতে তলিয়ে গেছে। জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলারও বিস্তীর্ণ এলাকা পানিবন্দি। পানি বাড়ছে সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, জকিগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলায়। নগরের অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. ওয়াদুদ জানান, এ পর্যন্ত জেলার ৬০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা পানিতে তলিয়ে গেছে। এগুলোতে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। গোয়াইনঘাটে ৪৮ ও কোম্পানীগঞ্জে ২৬ প্রতিষ্ঠানের সবগুলোতেই পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কানাইঘাটে ৩৭টি, জৈন্তাপুরে ১২টি, বিশ্বনাথে ১৩টি, সিলেট সদরে ১৯ ও জকিগঞ্জে ১৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, এ পরিস্থিতির মধ্যে আগামী রবিবার থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। বন্যার কারণে পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাড়ুয়া এলাকার বাসিন্দা সেবুল আহমদের ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। তবে এখন পর্যন্ত পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সিলেট শিক্ষা বোর্ড।
সিলেট শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বোর্ডের অধীন থাকা চার জেলায় এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৩ জন। এর মধ্যে বন্যাকবলিত জেলা সিলেটে ৪৩ হাজার ৮৪৪ জন ও সুনামগঞ্জে ২৩ হাজার ৭৫২ জন পরীক্ষার্থী আছে। ৪ জেলায় ১৪৯টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ৫৯টি ও সুনামগঞ্জে ৩৩টি পরীক্ষাকেন্দ্র আছে।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল গণমাধ্যমকে বলেন, বন্যার পানিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৯টি উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে।
Discussion about this post