শিক্ষার আলো ডেস্ক
সহকর্মীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক নারী সহকর্মী যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। তবে একে প্রহসন বলে দাবি করেছেন অভিযোগকারী শিক্ষিকা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা, ২০০৮-এর দুটি ধারায় অভিযুক্ত শিক্ষক ছোটনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্তাদেশও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তবে একটি ধারায় আনা অভিযোগ বিচারের আওতাবহির্ভূত হওয়ায় বিবেচনা করা হয়নি। এই ধারাটি (৩-ক) হল, ভুক্তভোগীকে সরাসরি শারীরিক নির্যাতন।
নীতিমালা অনুযায়ী ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্র’ অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটির তদন্ত শুরু করে। ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে অভিযোগ প্রমাণ হওয়া সাপেক্ষে শাস্তির সুপারিশ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ ১০ মাস পর কেন্দ্র তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২১৯তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ বিষয়ে ছোটন দেবনাথ বলেন, প্রথম থেকেই বলে আসছি, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি ষড়যন্ত্রমূলক এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। তদন্তেও অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। মূলত আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও হেনস্তা করার হীন উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এই বানোয়াট অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল।
অভিযোগকারী শিক্ষক বলেন, ‘এত দিন লড়ছিলাম আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া জঘন্য এক অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু বিচার চাইতে গিয়ে এবার নতুন করে আরেক প্রহসনের শিকার হলাম। আমার মূল অভিযোগ ছিল যৌন হয়রানির। তারা এটি আমলেই নিল না। আমাকে ১০ মাস পর জানাল, এ ঘটনা তদন্তের এখতিয়ারভুক্ত নয়। তাহলে ওই বিষয়ে সব ধরনের তদন্ত কেন করা হলো- ঘটনাস্থলে যাওয়া, সাক্ষীদের এ বিষয়ে প্রশ্ন করা, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীদের মুখোমুখি করে কল রেকর্ডিং শোনা হলো কেন? তাদের মতে, এসব তো বিবেচনাযোগ্যই নয়।
তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক তাসলিমা খাতুন বলেন, কোনো ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘটিত হলে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ারবহির্ভূত। ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদীর প্রমাণাদি এবং সার্বিক বিষয় বিশ্নেষণ করে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, তদন্ত ও বিশ্লেষণের জন্য ১০ মাস সময় লেগেছে। তবে এত সময় কেন লেগেছে তা নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক তাসলিমা খাতুন কোনো উত্তর দেননি।
Discussion about this post