অনলাইন ডেস্ক
অনেকেই এখন দুই সন্তান নীতি থেকে সরে এসেছেন। বেশিরভাগ পরিবারে একটি মাত্র সন্তানের জন্ম দেওয়ার ট্রেন্ডই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যাদের একটি মাত্র সন্তান আছে সঠিকভাবে তাকে বড় করতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন-
সন্তানকে সামাজিক করে তুলুন:
অনেক সময়ই দেখা যায়, এক সন্তান একাকীত্বের শিকার হয়। বাবা-মায়ের অখণ্ড মনোযোগও সেই একাকীত্ব কাটাতে পারে না। তাই শুরু থেকেই সন্তানকে নানারকম সামাজিক পরিস্থিতিতে ছেড়ে দিন। পার্কে বেড়াতে নিয়ে যান, তার শখের কোনো ক্লাসে ভর্তি করে দিন, সামার ক্যাম্পে পাঠান। এতে সন্তানের নিজস্ব সামাজিক বৃত্ত তৈরি হবে, নিজের জিনিসটা আর পাঁচজনের সঙ্গে ভাগ করে নিতে শিখবে। ভবিষ্যতে বিভিন্ন সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়াও সন্তানের জন্য সহজ হবে।
অতিরিক্ত আদর দেওয়া বন্ধ করুন:
একটি মাত্র সন্তান যাদের, তারা একদিকে যেমন সবসময় সন্তানের দিকে সতর্ক নজর রাখেন, তেমনি বাচ্চার নিরাপত্তার ব্যাপারেও তারা খুবই স্পর্শকাতর হন। সন্তান পড়ে গেলে বা কাঁদলে তারা কী করবেন বুঝে উঠতে পারেন না। কিন্তু সারাক্ষণ আগলে আগলে না রেখে সন্তানকে স্বাবলম্বী হওয়ার শিক্ষাই দেওয়া উচিত,যাতে বন্ধুদের সঙ্গে ঝামেলা, স্কুলের সমস্যা সে নিজেই মিটিয়ে নিতে পারে।
সন্তানকে শৃঙ্খলা মেনে চলতে শেখান :
সন্তান রাস্তায় বেরোলেই যদি নতুন খেলনার জন্য বায়না করে, আর আপনি যদি সবসময় কিনে দেন, তা হলে ভবিষ্যতের সমস্যাকেই আপনিই বাড়িয়ে তুলবেন। এতে সন্তান বুঝে যাবে, কী করলে আপনার মন গলানো সম্ভব। তাই সন্তান কাঁদলেই তার বায়না মেটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন না। বরং তাকে বুঝতে দিন, সবকিছু সে চাইলেই পেয়ে যাবে না। নিজের চাহিদার পাশাপাশি অপরের চাহিদাকেও সম্মান করার শিক্ষা সন্তানকে দেওয়া দরকার।
‘আমি’ নয় ‘আমরা’ :
পরিবারে একটি মাত্র বাচ্চা থাকলে তার ধারণা হয়ে যায়, তার কথাই শেষ কথা। এই ধারণা একবার জন্মালে সন্তান প্রচণ্ড একগুঁয়ে হয়ে যায়। শিশুকে মানুষ করে তোলার প্রথম ধাপ, তাকে এই ধারণা থেকে বের করে নিয়ে আসা। ফলে আপনার যদি একটি সন্তান থাকে, তা হলে তাকে শুরু থেকে বোঝান, তার ইচ্ছে অনিচ্ছের উপর নির্ভর করে সবকিছু চলবে না। সন্তানকে বন্ধু বা কাজিনদের সঙ্গে খেলনা বা খাবার ভাগ করে নিতে শেখান প্রথম থেকেই।
সন্তানকে অনুভূতিপ্রবণ করে তুলুন:
মনস্তত্ত্ববিদেরা বলছেন, সন্তানকে প্রথম থেকেই খোলামেলা পরিবেশে বড়ো হতে দিলে তাদের অনুভূতিগুলো জোরদার হয়ে ওঠে। সন্তানকে ব্যর্থতা, হতাশা, উদ্বেগ, ভয়ের মতো অনুভূতিগুলোর সঙ্গে পরিচিত হতে দিন। একমাত্র সন্তানেরা সবসময় চায় তাকে সবাই ভালো বলবে, বাহবা দেবে। সন্তানকে বোঝান, মাঝেমাঝে ভুল হওয়া খুব স্বাভাবিক। সবসময় সব কিছু ঠিক কাজ কোনও মানুষই করতে পারে না। তাই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
Discussion about this post