বিনোদন ডেস্ক
আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যাওয়া টাইটানিক থেকে রক্ষা পেয়ে ৭৮ বছর বেঁচে ছিলেন ভারতের বাসিন্দা রুথ এলিজাবেথ বেকার। তিনি ভারতের নাগরিক না হলেও তার জন্ম হয়েছিল সেখানেই। টাইটানিকের শেষ জীবিত যাত্রীর সঙ্গে ভারতের যোগসূত্রের এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গেছে।
টাইটানিক হিস্ট্রি সোসাইটির একজন ইতিহাসবিদ ডন লিঞ্চ সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। ১৯৭৫ সালে তিনি রুথ বেকারের পরিচয় জানতে পারেন। ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল ডুবন্ত টাইটানিকে ছিলেন ১২ বছরের রুথ। তিনি সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে ফেরেন। ১৯৯০ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা যান।
ইতিহাসবিদ ডন লিঞ্চ বলেন, ‘রুথই ছিলেন টাইটানিকের শেষ জীবিত যাত্রী, যার সঙ্গে ভারতের দৃঢ় যোগসূত্র ছিল। তিনি আমেরিকান হলেও ভারতেই বড় হয়ে ওঠেন। তিনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টাইটানিক দুর্ঘটনার গোটা ঘটনা বর্ণনা করতেন। কীভাবে ধীরে ধীরে অত বড় জাহাজ ডুবে গিয়েছিল, সে কথা তিনি বলতেন।’
রুথ বেকারের বিস্তারিত বর্ণনা থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে জেমস ক্যামেরন তার সিনেমার একাধিক সংলাপ তৈরি করেছিলেন। ‘রোজ’ চরিত্রটির ছেলেবেলার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন গ্লোরিয়া স্টিউওয়ার্ট। তার মুখেই রুথের কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা সংলাপ হিসেবে দিয়েছিলেন পরিচালক। নিজের ৮৪ বছর বয়সে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রুথ বেকার বলেছিলেন, ‘এতগুলো বছর কেটে গেছে। এখনও ওই জাহাজের গন্ধ আমার কাছে টাটকা।’
রুথ বেকারের বাবা অ্যালেন ওলিভার বেকার ভারতে একটি মিশনারিতে কর্মরত ছিলেন। ১৮৯৯ সালে রুথের জন্ম হয় ভারতে। কোদাইকানালে একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করা হয় তাকে। কেবলমাত্র রুথই নয়, তার দুই ভাইবোনও ভারতেই জন্মেছিল। ১৯১২ সালের ৭ মার্চ ভারত ছেড়ে চলে যায় বেকার পরিবার। মাদ্রাজ থেকে লন্ডনে জাহাজপথে একমাসের যাত্রা করে তারা। এরপর ১০ এপ্রিল একটি ট্রেনে চড়ে সাউথহ্যাম্পটনে পৌঁছায় বেকার পরিবার। অবশেষে ১২ এপ্রিল টাইটানিকে যাত্রা শুরু করেন রথ ও তার পরিবার।
Discussion about this post