নিজস্ব প্রতিবেদক
নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা (পিপিই) চালু করতে যাচ্ছে সরকার। আর প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার বিদ্যালয়ে এর পাইলটিং কার্যক্রমও শুরু করা হবে।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই এটি কার্যকর হবে। বর্ধিত পিপিই-এর অধীনে, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পাঁচ বছরের জায়গায় চার বছরের বেশি বাচ্চাদের সাথে শুরু হবে। প্রথম বছর হবে প্রাক-প্রাথমিক ১, দ্বিতীয় বছর হবে প্রাক-প্রাথমিক ২।
জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার (পিপিই) জন্য শিক্ষকদের ১৫ দিনের এককালীন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রশিক্ষণ শিশুদের বিকাশের ফলাফল শনাক্ত করতে, রিপোর্ট করতে এমন তাদের উন্নতিকে ট্র্যাক করতে সাহায্য করতে পারেনি। এর ফলে সরকার শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম দুই বছর মেয়াদী করা হয়েছে। গত ২৫ জুন এ বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে দুই বছর মেয়াদী প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে। পাইলটিংয়ের জন্য ৩ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করে পর্যায়ক্রমে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদী প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে।
এর আগে ২০১৪ সালে সালে ৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক বছর মেয়াদী প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে দেশের প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯ লাখ।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকেরা ১৫ দিনের ইনডাকশন ট্রেনিং পান। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করলেও তত্ত্বাবধান বা কোচিংয়ের মাধ্যমে চলমান প্রশিক্ষণ বা সহায়তার সীমিত সুযোগ পান বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
সমীক্ষা অনুসারে, বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রাক প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ বাড়াতে হবে। কেননা প্রাক প্রাথমিকে বর্তমান শিক্ষক সংখ্যা ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক আলমগীর মোহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিইড) পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রম কভার করার একটি পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এতে করে সমস্ত শিক্ষক শিশু মনোবিজ্ঞান এবং শিক্ষাবিদ্যা সম্পর্কে আরও বেশি ধারণা পান।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ফলে শিক্ষক সংকটের যে কথা বলা হচ্ছে সেটিও আর থাকবে না।
Discussion about this post