নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষাক্রম নিয়ে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার সবকিছু বদলে ফেলেছি। এখন শিক্ষায় পরিবর্তন ও সংস্কারের কথা বলছি না, বলছি ট্রন্সফরমেশনের কথা।
শিক্ষার্থীদের নিজেদের শিখতে হবে। অথচ ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, পাঠসূচি থেকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত সবকিছু বাদ দেওয়া হচ্ছে। আপনাদের অনুরোধ, গুজবে কান দেবেন না। সত্যতা যাচাই করুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে আমাদের অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)-এর ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী।
উচ্চশিক্ষা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েটদের প্রত্যাশা ও চাকরিদাতাদের প্রত্যাশার মধ্যে বিস্তর ফারাক। শিক্ষার্থীদের সফট স্কিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিতে পারছে না এখনও। সে কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব ভালো পড়াশোনা করেও অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে। প্রতিবেশী অনেক দেশের শিক্ষার্থীরা হয়তো এত বেশি লেখাপড়া না করেও সফট স্কিল অর্জন করায় তাদের চাকরির ক্ষেত্রে অফার করা হচ্ছে। কাজেই কর্মজগতে আমাদের কী প্রয়োজন সেটি জানতে হবে, আর তাহলে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিউনিকেশন স্কিলস, কোলাবরেশন স্কিলস, প্রব্লেম সলভিং স্কিলসসহ নানা রকমের স্কিল জানতে হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গবেষণা বলছে, সেকেন্ডারি স্কুলে যদি মাধ্যম কোলাবরেটিং প্রব্লেম সলভ শেখাই তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ২ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে। আমরা মাধ্যমিক পর্যায় থেকে শুরু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু যারা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পার করে এসেছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সেটি শেখাতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি খুব জ্ঞান অর্জন করলাম, দক্ষতা অর্জন করলাম, সফট স্কিল অর্জন করলাম; কিন্তু মূল্যবোধ, সততা, নিষ্ঠা, মানবিকতা, সহমর্মিতা, অসাম্প্রদায়িকতা, দেশপ্রেম যদি না শিখি তাহলে খুব ভালো করলাম না। এই কাজগুলো আমাদের শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যেভাবে ডিগ্রিগুলো অর্গানাইজড আছে তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমাদের মডিউলার এডুকেশনে যাওয়ার কথা। সামনে যে দিন আসছে, যেভাবে দ্রুত পৃথিবী পরিবর্তন হচ্ছে, তাতে আজ যে ডিগ্রি অর্জন করছেন পাঁচ বছর পর তা আর প্রয়োজন নাও হতে পারে। সে জন্য রিস্কিল, আপস্কিল করতে হবে।’
সমাবর্তনে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জর্জিয়ার ককেশাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টসের বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কখা শেঞ্জেলিয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং আইএসি যুক্তরাজ্যর রেজিডেন্ট জাজ ও ফিনল্যান্ডের অনারারি কনসুল জুলিয়ান ফিলিপস। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইউবিএটি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জুবের আলিম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইউবিএটি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জুবের আলিম।
Discussion about this post