আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তেহরানে রাশিয়া-তুরস্ক-ইরানের শীর্ষ নেতার বৈঠক হলো। সেখানেই উত্তর সিরিয়ায় সামরিক অভিযানে দুই দেশের সাহায্য চাইলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
উত্তর সিরিয়ায় কুর্দিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা ভাবছেন, শীর্ষ বৈঠকে সেই কথা জানালেন এরদোয়ান। তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির কাছ থেকে এই বিষয়ে সাহায্য চেয়েছেন। একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, তুরস্ক একাই ওই সন্ত্রাসবাদীদের মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে। এরদোয়ান অবশ্য সম্প্রতি বেশ কয়েক বার এই অভিযানের কথা বলেছেন।
এই তিন নেতার বৈঠকে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল সিরিয়া। গত কয়েক বছর ধরে তারা এই আলোচনা চালাচ্ছেন। এই প্রয়াসকে বলা হয় আস্তানা শান্তি প্রক্রিয়া।
গত কয়েক মাস ধরে এরদোয়ান উত্তর সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের কথা বলছেন। ইউফ্রেটাস নদীর তীরে তাল রিফাতের মতো কিছু শহর সশস্ত্র কুর্দি গোষ্ঠী পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি)-র নিয়ন্ত্রণে। এরদোয়ান ওই শহরগুলি থেকে ওয়াইপিজি-কে সরাতে চান।
এরদোয়ান দাবি করেন, ওয়াইপিজি হলো সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। তারা কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-র সঙ্গে যুক্ত। ১৯৮৪ সাল থেকে পিকেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তুরস্কের অভিযোগ, পিকেকে-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওয়াইপিজি সিরিয়ায় তুরস্কের সেনার উপর হামলা করছে।
বৈঠকে এরদোয়ান বলেছেন, তিনি তুরস্কের দক্ষিণে সিরিয়ার সীমান্তে ৩০ কিলোমিটার-জুড়ে সেফ জোন তৈরি করতে চান। এরদোয়ান বলেছেন, আপনারা বলছেন, তুরস্কের চিন্তা বুঝতে পারছেন। কিন্তু শুধু এই কথা যথেষ্ট নয়।
বৈঠকের পর রাইসি বলেছেন, আমরা চাই, সিরিয়ার সরকার পুরো দেশের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করুক। ইউফ্রেটাসের পূর্বদিকে অ্যামেরিকানদের উপস্থিত থাকার কোনো কারণই নেই। তাদের অবিলম্বে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।
তিন নেতাই জানিয়েছেন, তারা সিরিয়ার সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করতে চান। তারা সিরিয়ার দুর্দশাগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষকে সাহায্য করতে চান।
এই তিন নেতা একসঙ্গে বৈঠক করেন, তাছাড়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হয়েছে। তারপর তিন নেতা যৌথ বিবৃতি জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় তারা একসঙ্গে কাজ করবেন। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার নামে সিরিয়ায় নতুন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা হবে না। আর সিরিয়ায় যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে, তা নিয়ে কোনোরকম বিভেদ, রাজনীতি করা যাবে না, কোনো পূর্বশর্ত রাখা যাবে না।
Discussion about this post