তানভীরুল ইসলাম
একজন বাংলাদেশি নাগরিকের পরিচয় বহন করে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড। এই জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ডে থাকা তথ্যগুলো যাচাইয়ের ক্ষেত্রে অনেকেই বিভ্রান্তিতে ভোগেন যে কোথায় যাবেন, কী করবেন এ নিয়ে। তাঁদের জন্য সুখবর হচ্ছে এনআইডি কার্ড অনলাইনে বেশ সহজে যাচাই করা যায়। তবে, জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইনে যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করার নিয়ম:
বাংলাদেশে অনলাইন সেবা এখন বেশ জনপ্রিয়। দাপ্তরিক কাজ থেকে শুরু করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়াও এখন অনলাইনে করা হয়। সহজ ও অল্প সময়ে সেবা নেওয়া সম্ভব বলে এর গ্রহণযোগ্যতাও ব্যাপক। এই অনলাইন সেবার আওতায় জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করার প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।লেখার একেবারে শুরুতে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ে কিছু ধাপের কথা বলা হয়েছে। এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের জন্য নিচে ১৭টি ধাপ অনুসরণ করতে হবে—
১. বাংলাদেশ এনআইডি পোর্টাল (https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/) এ প্রবেশ করতে হবে। এই ঠিকানায় ঢুকলে নিম্নরূপ ইন্টারফেসটি দেখাবে।
২. ইন্টারফেসটিতে কিছু ডায়ালগ বক্স আসবে: ১. অ্যাকাউন্ট নেই? ২. নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন ৩. লগইন করুন।
৩. যাঁদের অ্যাকাউন্ট করা হয়নি, তাঁদের অ্যাকাউন্ট নেই অপশনটির রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করতে হবে।
৪. রেজিস্টার করুন বাটন ক্লিক করার মাধ্যমে নতুন একটি ইন্টারফেস আসবে।
৫. এখন অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার-এ (নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পরিচয়পত্রে থাকা জন্ম তারিখ এবং ছবিতে প্রদর্শিত কোডটি প্রবেশ করান) ধাপটি সম্পন্ন করতে হবে।
৬. পরবর্তী ধাপে বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা দেখাবে। সেখানে এনআইডি কার্ড অনুযায়ী নিজ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা নির্ধারণ করতে হবে। যদি স্থায়ী আর বর্তমান ঠিকানা একই হয়, তাহলে একইভাবে দিতে হবে। ভিন্ন হলে আলাদাভাবে দিতে হবে। এখন পরবর্তী লেখা বাটনটিতে ক্লিক করুন।
৭. এখানে মোবাইল নম্বর দিয়ে ‘বার্তা পাঠান’ বাটনে ক্লিক করলে মোবাইল নম্বরটিতে একটি এসএমএস আসবে।
৮. ডেস্কটপে এই পদ্ধতি অনুসরণ করার ক্ষেত্রে এই ধাপটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখানে NID Wallet Apps-টি ইন্টিগ্রেট করে ইনস্টল করতে হবে।
৯. NID Wallet Apps ইনস্টল বাটনটি ক্লিক করলে ডিভাইস পছন্দ করার জন্য একটি ইন্টারফেস আসবে।
১০. আবার ইনস্টলে ক্লিক করলে দেখতে পাবেন, আপনার গুগল প্লে-স্টোরে থাকা ই-মেইল ভ্যারিফাই করতে চাইবে।
১১. এখন ‘নেক্সট’ বাটনে ক্লিক করার পর এ রকম একটি ইনফরমেশন চাইবে এবং দ্বিতীয় অপশনটি সিলেক্ট করে ‘সেভ’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
১২. NID Wallet Apps-টি অটোমেটিক আপনার মোবাইলে ইনস্টল হয়ে যাবে। যদি না হয়, তবে মোবাইলের স্টোরেজ চেক করতে হবে।
১৩. মোবাইলে অ্যাপটি অ্যাকটিভ হওয়ার পর ডেস্কটপে থাকা QR কোডটি মোবাইলে ডিভাইসে থাকা QR কোড স্ক্যানার অ্যাপ দ্বারা স্ক্যান করতে হবে।
১৪. এখন ফেসস্ক্যান করতে বলবে। মোবাইলের ইন্টারফেসে যেভাবে মুখ ডান-বাম করতে বলবে, ঠিক সেভাবে করতে হবে।
১৫. এই ধাপে ইউজারের নাম এবং পাসওয়ার্ড চাইবে। ইউজার নাম যেমন: malik 07 অথবা tanvirul 03 এভাবে এবং পাসওয়ার্ড নিজের মতো দিতে হবে।
১৬. সবশেষ ধাপটিতে ইউজারের নাম, পাসওয়ার্ড ও ছবিতে প্রদর্শিত কোডটি দিয়ে লগইন করতে হবে এবং ছবিসহ একটি ড্যাশবোর্ড দেখা যাবে।
১৭. এখানে জাতীয় পরিচয়পত্রের সব তথ্য যাচাই করা যাবে। তা ছাড়া নতুন পরিচয়পত্রধারী হলে এখানে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে কার্ডটি দেখা যাবে।
উপরিউক্ত, প্রতিটি ধাপ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মগুলো মেনে ধাপগুলো সম্পন্ন করলে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করা সম্ভব। তা ছাড়া আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-সম্পর্কিত একটি ভিডিও দেওয়া হলো। সেখানে মোবাইল ও ডেস্কটপ দুটি ডিভাইস দিয়ে কীভাবে পরিচয়পত্র যাচাই করা হবে, সে বিষয়ে পৃথকভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
পরিশেষে
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করার পদ্ধতি বেশ সহজ এবং এতে সময়ও কম লাগে। জাতীয় পরিচয়পত্রে কোনো ধরনের সমস্যা পেলে তাদের সহায়তা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। ডেস্কটপ ও মোবাইল—দুই ডিভাইস দিয়েই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। মোবাইল দ্বারা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা তুলনামূলক সহজ। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি একই রকম। তাই আর দেরি না করে ধাপগুলো দেখে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে নিন।
Discussion about this post