খেলাধূলা ডেস্ক
বিশ্ব ফুটবলের ত্রিরত্ন লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র, কিলিয়ান এমবাপেরা পায়ের জাদুতে মোহাবিষ্ট করলেন, ম্যাচের প্রথম বাঁশি থেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিপক্ষকে নিয়ে খেললেন। তাদের অবিশ্বাস্য ফুটবল শৈলীতে লিগ আঁ-তে বড় জয় পেয়েছে পিএসজি। প্যারিসিয়ানদের নতুন কোচ ক্রিস্তোফ গালতিয়েরের সাবেক দল লিলকে ৭-১ গোলে ধসিয়ে দিয়েছে পিএসজি। হ্যাটট্রিক করেছেন এমবাপে, জোড়া গোল পেয়েছেন নেইমার, একবার করে লক্ষ্যভেদ করেছেন মেসি এবং আশরাফ হাকিমি।
গেল মৌসুমে মেসি-নেইমার-এমবাপে ত্রয়ী একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পেরেছেন কমই। এবার প্রাক-মৌসুম থেকেই ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তারা। অবশেষে লিলের বিপক্ষে এই ত্রয়ীর বিধ্বংসী রূপ দেখল বিশ্ব ফুটবল। মাত্র ৮ সেকেন্ডে লিগ আঁ ইতিহাসের দ্রুততম গোল দিয়ে যে ধ্বংসযজ্ঞের শুরু, ৮৭ মিনিটে দলের সপ্তম এবং এমবাপের হ্যাটট্রিক গোল দিয়ে তার শেষ হয়।
কিক-অফ থেকে দুই পাস পর বল পেয়ে কিলিয়ান এমবাপের উদ্দেশে অনন্যসাধারণ এক পাস বাড়ান মেসি। সেই পাস ধরে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়ান ফরাসি ফরোয়ার্ড। বল যখন জাল স্পর্শ করে, ঘড়ির কাঁটা তখন জানিয়ে দেয় রেফারি বাঁশিতে ফুঁ দেওয়ার পর মোটে ৮ সেকেন্ড পেরিয়েছে। মেসি-এমবাপের চমকে দেওয়া এই মুভে লিগ আঁ ইতিহাসের দ্রুততম গোলের রেকর্ড লেখা হয় নতুন করে।
প্রথমার্ধে এরপর একে একে আরও তিন গোল করেন পিএসজি। ২৭ মিনিটে মেসি, ৩৯ মিনিটে হাকিমি এবং তার মিনিট চারেক পর নেইমার ম্যাচে তার প্রথম গোল করেন। ৪-০ গোলের বিশাল লিডে প্রথমার্ধ শেষেই যেন জয় নিশ্চিত হয়ে যায় পিএসজির। পরের ৪৫ মিনিট পরিণত হয় আনুষ্ঠানিকতায়।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে আবারও লিলের জাল কাঁপান নেইমার। তবে এর মিনিট দুয়েক পর স্বাগতিকদের উইঙ্গার জোনাথান বাম্বা পিএসজির জালে বল প্রবেশ করালে ম্যাচে একটা ‘লাইফলাইন’ পায় লিল। তবে সেই লাইফলাইন কাজে লাগাতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে তারা। ৬৬ এবং ৮৭ মিনিটে আরও দুইবার লিলের জালে বল পাঠিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এমবাপে। ম্যাচে এমবাপের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় গোলের সঙ্গে হাকিমির গোল বানিয়ে দিয়ে জোড়া গোলের সঙ্গে অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিকও করেছেন নেইমার
ম্যাচে বল দখলের দিক দিয়ে পিএসজির চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না লিল। শট নেওয়ার দিক দিয়েও তারা পিএসজিকে সমানে সমান টক্কর দিয়েছে। লিলের গোলমুখে পিএসজির খেলোয়াড়রা ম্যাচজুড়ে ১৬টি শট করেছেন, যার নয়টি ছিল লক্ষ্যে, এর মধ্য থেকেই সাতবার বল জালে জড়িয়েছেন তারা। অন্যদিকে সমান ১৬টি শত নিয়েছে লিলও, যার দশটি ছিল লক্ষ্যে। পিএসজির চেয়ে একটি শট বেশি লক্ষ্যে রেখেও মাত্র একবার বল জালে পাঠাতে সক্ষম হয় তারা। লিলের ফিনিশিং দুর্বলতা এবং পিএসজির আক্রমণভাগের ত্রয়ীর অবিশ্বাস্য ফিনিশিং সক্ষমতাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে।
টানা তিন জয়ে মৌসুম শুরু করে লিগ টেবিলের শীর্ষে নিজেদের অবস্থান মজবুত করছে পিএসজি।
Discussion about this post