নিজস্ব প্রতিবেদক
ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৬ নেত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন বহিষ্কৃতরা। তারা বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। সোমবার এ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বহিষ্কৃতদের অভিযোগ, নির্যাতনের বিচারের পরিবর্তে উল্টো বহিষ্কার করা হয়েছে। যারা নির্যাতন করেছে তারা বহাল তবিয়তে আছে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় অপরাধ করেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও তাদের অনুসারীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃতরা বলেন, ভিত্তিহীন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।
তারা আরও বলেন, সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে ২১ জন নেত্রী ছিলেন, কিন্তু ১২ জনকে কেন বহিষ্কার করা হলো? এতেই বুঝা যায় আমরা তাদের প্রতিহিংসার স্বীকার।
সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত সহসভাপতি সোনালি আক্তার বলেন, ‘সোমবার দুপুর থেকে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে অনশন শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস আপুর ওপর হওয়া হামলার ঘটনায় এতসব ঘটনা। অথচ সেই আপুর ওপর হওয়া হামলার কোনো বিচার না করে আমরা যারা এটির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি, তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।’
সোনালী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার না হয়ে একপাক্ষিক বিচার হয়েছে। এই একপাক্ষিক বিচারের প্রতিবাদে আমরা একটু পর ধানমন্ডির পার্টি অফিসে গিয়ে আমরণ অনশন করব। আমরা তাদের বহিষ্কার চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি জান্নাতুল ফেরদৌস আপুর ওপর হওয়া হামলার সুষ্ঠু বিচার।’
এর আগে রবিবার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত এবং ১৬ নেত্রীকে বহিষ্কার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।
সেইসঙ্গে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা উর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখি এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তারকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে এই বিশৃঙ্খলার সঙ্গে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post