নিজস্ব প্রতিবেদক
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তন প্রয়াত অধ্যাপক আহমদ কবির স্মরণে প্রথম স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে শতবর্ষী হওয়ার গৌরব অর্জন করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে জ্ঞান আহরণ ও সৃষ্টি করা।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তার অস্তিত্বের একশত বছর পার হয়ে এসেছে। সামনের দিনগুলোতে সে কিভাবে এগোবে সে প্রশ্নটা খুবই সঙ্গত। উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাজে বিতরণের লক্ষ্যে জ্ঞান আহরণ ও সৃষ্টি করার প্রয়োজন হবে। জ্ঞানের সৃষ্টি হয় গবেষণার মধ্য দিয়ে। তাই গবেষণা চাই। গবেষণাকে হতে হবে মৌলিক ও উপযোগী। আর গবেষণার ফল প্রকাশ করার জন্য দরকার হবে প্রকাশনার। বস্তুত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিনতে হলে সেখানে কী ধরনের ও মানের গবেষণা হচ্ছে সেটা যেমন দেখতে হয়, তেমনি খোঁজ নিতে হয় তার প্রকাশনারও।
কেবল নতুন বই প্রকাশ নয়, গবেষণা-ভিত্তিক বই প্রকাশের প্রতি গুরুত্বরোপ করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বই লেখার জন্য গবেষণাও আবশ্যক হবে। তবে সেই গবেষণা প্রকাশ করতে হবে বাংলাভাষাতে, যাতে শিক্ষার্থী ও অন্য গবেষকদের কাছে তা সহজে পৌঁছাতে পারে। এই কাজ করতে পেলে দেখা যাবে ভাষার ধারণ ও প্রকাশ, উভয় ক্ষমতাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যিনি বই লিখছেন তার নিজের কাছেও বইয়ের বিষয়বস্তু অধিকতর স্পষ্ট ও জীবন্ত হয়ে উঠছে।
উচ্চশিক্ষায় বাংলা ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম করার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব দেওয়া আবশ্যক বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বড় ও বিশেষ রকমের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। সেটা হলো বাংলা ভাষার মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা দান। এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল নিশ্চয়ই, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেরও কর্তব্য রাষ্ট্রকে দায়িত্বসচেতন করে তোলা এবং নিজের দিক থেকেও উদ্যোগী হয়ে দায়িত্বটি গ্রহণ করা। আমাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন কেবল যে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে চেয়েছে তা-ই নয়, আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল বাংলা ভাষা হবে উচ্চ আদালতের ভাষা এবং অবশ্যই সর্বস্তরে শিক্ষার মাধ্যম। এই দুটির কোনটাই অর্জিত হয়নি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
Discussion about this post