শিক্ষার আলো ডেস্ক
ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংহতির অন্যতম ধারকবাহক পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নতুন হলেও প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে সুদীর্ঘ দেড়শ বছরেরও ইতিহাস।
জানা যায়, ১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল যাত্রা শুরু করে। ১৮৭২ সালে স্কুলের ভার তুলে দেওয়া হয়েছিল বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর হাতে। কিশোরীলাল চৌধুরী তার বাবার নামে স্কুলের নামকরণ করেন জগন্নাথ স্কুল। এভাবেই ১৮৭২ সালে ব্রাহ্ম স্কুল থেকে জন্মলাভ করে জগন্নাথ স্কুল। ১৮৮৪ সালে এ স্কুলকে দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজে রূপান্তর করা হয়। ১৯০৮ সালে জগন্নাথ কলেজ প্রথম শ্রেণীর কলেজে রূপান্তরিত হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কার্যক্রম বন্ধ করে এটিকে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে অবনমিত করা হয়।
পুরান ঢাকার নারীশিক্ষায় বাঁধা দূর করতে ১৯৪২ সালে জগন্নাথ কলেজে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ১৯৪৯ সালে আবার এই কলেজে শুরু হয় স্নাতক পর্যায়। ১৯৬৩ সালে পুনরায় সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণ করা হলেও পরের বছরে আবার এটি বেসরকারি মর্যাদায় ফিরে যায়। সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর সাড়ে ৭ একর জায়গা নিয়ে সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে সাড়ে সাত একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া কেরানীগঞ্জ জেলখানার বিপরীতে আরও ৭.৫ একর জমি কেনা রয়েছে। আর নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ২০০ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। বর্তমান ছয়টি অনুষদে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৭৮ জন শিক্ষকের মধ্যে অধ্যাপক ১৪৪ জন, সহযোগী অধ্যাপক ১৭৭ জন, সহকারী অধ্যাপক ২৯০ জন ও প্রভাষক ৬৭ জন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৫৬ জন। এ ছাড়া এমফিল ২৪৫ জন ও পিএইচডি করছেন ১৪১ জন শিক্ষার্থী।
উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দিতে কাজ করছি। গবেষণা খাতে গতবারের চেয়ে বাজেট দ্বিগুণ করে দিয়েছি। লাইব্রেরি, আইসিটি, কম্পিউটার কেনার বাজেট বাড়ানো হয়েছে। আশা করি গবেষণায় আগামীতে আরও বাজেট বৃদ্ধি করে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নিত করতে সচেষ্ট হবো। আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। থাকার জন্য নেই আবাসনের ব্যবস্থা, খেতে পারে না পুষ্টিকর খাবার তারপরও আমাদের শিক্ষার্থীরা সর্বক্ষেত্রে রেখে চলছে স্বাক্ষরতার ছাপ। আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে যে আদম্য স্পৃহা তৈরি হয়েছে নানা কারনে সেটাই তাদের সফলতার মূলমন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের নতুন ক্যাম্পাসের কাজও দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করবো। আমাদের মাস্টারপ্ল্যান ও ভূমি অধিগ্রহণও প্রায় শেষ পর্যায়ে। সেখানে আমাদের বাউন্ডারি ওয়ালের কাজও চলামান। আশা করি খুব শিগগিরই কার্যক্রম শেষ করতে পারবো। নতুন ক্যাম্পাসে আমরা প্রথমই আবাসিক হলগুলোকে স্থাপন করার চেষ্টা করবো। যাতে করে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সব শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করবো। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের ১ হাজার দুইশো ছাত্রীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছি।
Discussion about this post