শিক্ষার আলো ডেস্ক
পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতলের সোশাল অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার মো. হাবিবুর রহমান ৫২ বছর বয়সে এমবিএ পরীক্ষায় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে তাক লাগিয়েছেন।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যান ও কোর্স কোডিনেটর প্রফেসর মো. মামুনুর রশিদ জানান, অক্টোবর-২০২২ এ প্রকাশিত এমবিএ (সন্ধ্যাকালীন) পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ৫২ বছর বয়সী মো. হাবিবুর রহমান ৪.০০ এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩.৮৬ সিজিপিএ নিয়ে ব্যাচের ১৪০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।
হাবিবুর রহমানের পিতার নাম আলহাজ্ব এলাহী বকস। তার বাড়ি রাজাবাসর গ্রামের পার্বতীপুর এলাকার দিনাজপুরে। বিজ্ঞান বিভাগে ১৯৮৬ সালে তিনি পার্বতীপুরের জ্ঞানাংকুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৮৮ সালে পার্বতীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ১৯৯২ সালে ল্যাম্ব হাসপাতালে সেবামূলক কার্যক্রমে ‘মাঠকর্মী’ হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে সোশাল অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
চাকরির পাশাপাশি ১৯৯৩ সালে তিনি ডিগ্রি পাস করেন। ২০০৭ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স অব সোসাল সায়েন্স (অর্থনীতি) পরীক্ষায় ১ম শ্রেণিতে পাস করেন। এরপর ২০২২ সালে চাকরির পাশাপাশি প্রায় ১৫ বছর পর এসে ৫২ বছর বয়সে তিনি এমবিএ পরীক্ষায় এমন ফল লাভ করলেন।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, মো. হাবিবুর রহমান এমন একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি, যিনি সব সময় নতুন কিছু শিখতে খুব পছন্দ করেন। তার শিক্ষক হিসেবে আমি তার অসাধারণ ফলের জন্য সত্যিই গর্বিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মো. শামীম হোসাইন বলেন, বাংলাদেশে অনেকেই মনে করেন, যে একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে তারা আর উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবেন না। কিন্তু মো. হাবিবুর রহমানের অসাধারণ ফল প্রমাণ করে পড়াশোনায় বড় সাফল্যের পথে বয়স কোনো বাধা নয়।
বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মোখলেসুর রহমান সালাফি বলেন, আমাদের ইতিপূবের্র ১১টি সান্ধ্যকালীন ক্লাসের এমবিএ পরীক্ষার ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে মো. হাবিবুর রহমান সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩.৮৬ পেয়ে প্রথম শেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।
ওয়ার্ল্ড মিশন প্রেয়ারলীগ (ল্যাম্ব হাসপাতাল) অপারেশন ডিরেক্টর স্বপন পাহান জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে হাবিবুর রহমান দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন বিভাগে ব্যবস্থাপনার কাজ দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছেন। তার এমন অর্জনে তারা খুবই আনন্দিত।
Discussion about this post