বাংলা ট্রিবিউন
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। গত কয়েকদিনে অনেক পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও কাজের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার (২৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ৮টি অঞ্চলভিত্তিক পোশাক কারখানা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ সিদ্ধান্তের পর রবিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুরসহ রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা খুলতে দেখা গেছে। এসব কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের প্রবেশ করানো হয়েছে।
রাজধানীর মিরপুর এলাকার একটি পোশাক কারখানার নাম স্নোটেক্স। কারখানাটিতে গিয়ে জানা যায়, দু’দিন হলো এটি খোলা হয়েছে। এখানে প্রায় ৭০০ শ্রমিক কাজ করেন, কিন্তু এখন ৫০০ জনের মতো এসেছেন। সেখানে দেখে গেছে, সামাজিক দূরত্ব মেনে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে শ্রমিকদের প্রবেশ করানো হচ্ছে।
স্নোটেক্সের শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ভেতরে বসার ব্যবস্থা বদলেছে। দূরে দূরে বসতে হচ্ছে তাদের।
মিরপুর-১১ এর একটি পোশাক কারখানার নাম ক্লামুন। কারখানাটি আজ খুলেছে। এতে ৬৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে আজ এসেছেন ৪০০ জনের মতো।
কারখানাটির সিকিউরিটি ম্যানেজার আবদুল হালিম বলেন, ‘আজকে কারখানাটি খুলেছে। এখন বায়ার এলেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। যারা আপাতত আসতে চান না, তারা ফোনে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের চাকরি নিয়ে সমস্যা হবে না।’ তবে কারখানাটিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করা হচ্ছে কিনা তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
মিরপুরের কালশীর ২২ তলা এলাকার একটি গার্মেন্টসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (অ্যাডমিন) জানান, এই কারখানায় শ্রমিক প্রায় ৩ হাজার ২০০ জন। তাদের অর্ধেকও আসেননি। আশপাশে যারা ছিলেন তাদের দিয়ে কাজ চলছে। যেহেতু লোক কম, তাই ৬ ফিট দূরে দূরে বসানো হচ্ছে। যারা ঢাকার বাইরে আছেন, তাদের আসতে বলা হয়নি।
তবে রাজধানীর গাবতলী, টেকনিক্যাল এলাকার গার্মেন্টস; শ্যাওড়াপাড়ার জেকে ফ্যাশন ও মিরপুর-১০ এর ভিশনও বন্ধ পাওয়া যায়।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, ঢাকার ভেতরে তেমন একটা কারখানা খোলা হয়নি। তবে আশুলিয়া ও গাজীপুরের অনেক কারখানা খোলা হয়েছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা গাজীপুর ও আশুলিয়ায় শ্রমিকদের কাছ থেকে খবর পাচ্ছি। এসব এলাকায় গার্মেন্টস খুলেছে। তবে যে পরিমাণ কারখানা খুলে দেবে বলে আশঙ্কা করছিলাম, সে পরিমাণ খোলেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার ভেতরের খুব কম কারখানা খুলেছে, যেগুলো খোলা সেগুলো আগে থেকে খোলা ছিল। তবে উত্তরার দিকে কিছু কারখানা আজকে খুলেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
এর আগে শনিবার বিজিএমইএ’র গাইডলাইনে বলা হয়, কারখানা ভবনের বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখুন। কারখানা অভ্যন্তরে প্রবেশের ক্ষেত্রে এমনভাবে পরিকল্পনা করুন, যেন প্রত্যেক প্রবেশকারী হাত ধোয়ার স্থানে অন্তত ২০ সেকেন্ড সময় পেতে পারেন। কর্মীদের জুতায় জীবাণুনাশক স্প্রে করার ব্যবস্থা রাখুন অথবা কর্মীরা কারখানা প্রাঙ্গণে প্রবেশের পূর্বে তাদের জুতাগুলো যেন পলিব্যাগে রেখে একটি নির্দিষ্ট স্থানে (সু র্যাক) রেখে দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা নিন। যারা কারখানায় প্রবেশ করবেন, তাদের দেহের তাপমাত্রা মেপে দেখার জন্য থার্মোমিটার গান রাখুন ও ব্যবহার করুন। কারও দেহের তাপমাত্রা ৩৭.২ ডিগ্রি সে. এর অধিক হলে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিন।
দেখুন ভিডিও…
Discussion about this post