বিনোদন ডেস্ক
জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে দেশবাসী চিনেছিল প্রতিভাবান গায়ক আকবরকে। একটি গানেই রাতারাতি তাকে তারকার খ্যাতিও এনে দেয়।
তবে সেটা বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি তিনি। কর্মহীনতা আর অসুস্থতায় জীবনটা বিবর্ণ হয়ে ওঠে তার। সম্প্রতি করোনা মহামারিতে আকবরের অবস্থা আরও শোচনীয়।
গতকাল (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অবস্থার কথা তুলে ধরেন এই গায়ক। জানান, গত দুই মাস যাবত কোনও কাজই করতে পারেননি। বাসাতেও খাবার নেই। মুদির দোকানি বাকি বন্ধ করে দিয়েছে। পরিবার নিয়ে একপ্রকার উপোস থাকতে হচ্ছে তাকে।
বিষয়টি নজরে আসে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানও জানতে পারেন তা। তাই তিনি আকবরের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানালেন ।
আজ সকালে আকবর ফেসবুকে লেখেন, ‘গত বছরের শুরুতে নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধলো। জীবনের গতিও থেমে গেল।আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। যে সঞ্চয়পত্র আমাকে দিয়েছিলেন, সেটা দিয়ে চিকিৎসা হয়ে যায়। আর মাঝে মাঝে অনুষ্ঠান করে সংসারটা অনেক কষ্টে চলে যাচ্ছিলাম। তারপর এই করোনা নামক মহামারি এসে আমাদের পুরো জীবনটাই এলোমেলো করে দিলো। গত দুই মাস ধরে আমার সমস্ত কাজই বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকার ব্যাংক বন্ধ থাকায় সঞ্চয়ের টাকাটাও উঠাতে পারছি না। খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে জীবনটা অতিবাহিত করছি। আমার চিকিৎসা পুরো বন্ধ হয়ে গেছে। সংসারই চালাতে পারছি না; ঔষধ কিনবো কীভাবে? খুব কষ্ট লাগে এটা ভেবে যে, আজ এই বিপদের দিনে আমার পাশে কেউ নাই।’
বিষয়টি বিকালের দিকে জানতে পারেন জায়েদ খান। রাত সাড়ে আটটার দিকে আকবরের বাসায় যান এই নায়ক।
তিনি বলেন, ‘উনার জন্য খুব মায়া লাগছে। নইলে না গিয়েও হয়তো খোঁজখবর নিতে পারতাম। শুনেছিলাম, উনার ঘরে খাবার ও মেডিসিন নাই। আগে এগুলোর ব্যবস্থা করেছি। হাতে নগদ কিছু টাকা দিয়েছি। সঙ্গে চাল-ডালসহ বেশ কিছু খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম। করোনার এই সময়ে খাবার ও চিকিৎসাসহ উনার যা যা লাগে আমি সাধ্যমতো ব্যবস্থা করবো।’
এদিকে আকবর জানান, বরাবরের মতো এবারও অর্থ-সহযোগিতা করে পাশে দাঁড়িয়েছেন তার আবিষ্কারক ‘ইত্যাদি’র জনক হানিফ সংকেত।
‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গান গেয়ে খ্যাতি পাওয়া এ গায়ক গত বছরের জানুয়ারিতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিডনি, রক্ত শূন্যতা, টিবি ভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি। কোমর থেকে দুই পা অবধি অবশ হয়ে যায়। সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আকবরকে ডেকে তার চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ টাকা (সঞ্চয়পত্র) অনুদান দেন। সেই টাকায় মাসে গড়ে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা পান আকবর। সেটি একবারে তিন মাস পর দেওয়া হয়।
আকবর জানান, করোনা মহামারিতে অনেক অসচ্ছল শিল্পী খাদ্যসামগ্রী পেলেও তার খোঁজ তেমন কেউ নেয়নি।
Discussion about this post