নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী বছরের (২০২৩) জানুয়ারি থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু হবে আউটকাম বেজড নতুন কারিকুলাম পদ্ধতি। স্বতন্ত্র গ্রেডিং পদ্ধতি ছাড়াও আগামী বছর থেকে নতুন কিছু সিদ্ধান্ত আসছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। নতুন সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আগামী বছরের থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তিন সেমিস্টারের পরিবর্তে দুই সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হচ্ছে বলে জানা যায়।
ইতোমধ্যে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান বাড়ানো ও শিক্ষার্থীরা যেন আরো ভালোভাবে হাতেকলমে শিখতে পারেন সেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ওমর ফারুখ বলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুই সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হবে। এতে শিক্ষার মান বাড়বে। শিক্ষার্থীরা প্রায়োগিক দিকগুলোতে দক্ষতা অর্জন করবে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বেঁধে দেওয়া অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতিও মানছে না একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। নিয়মানুযায়ী ৮০ নম্বরের বেশি পেলে ‘এ প্লাস’ দেওয়ার কথা থাকলেও অনেকে এ পদ্ধতি মানছে না। তাই তাদেরও সতর্ক করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, আউটকাম বেজড এডুকেশন সিস্টেম বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্কের (বিএনকিউএফ) শর্ত। আর অ্যাক্রেডিটেশন সনদ না থাকলে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় চালুও করা যাবে না। তাই এ সিস্টেম চালু করতে হবে।
তিনি বলেন, সর্বজনীন পদ্ধতি হচ্ছে ৮০ নম্বরের ওপরে এ প্লাস, কিন্তু কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ৯০ নম্বরের ওপরে না পেলে এ প্লাস দিচ্ছে না। অন্য গ্রেডগুলোতেও বৈষম্য রয়েছে। এটা নিরসনকল্পে আগেও চিঠি দেওয়া হয়েছিল, ফের সতর্ক করা হয়েছে। নতুন বছরে এ সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত চালু হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
জানা গেছে, ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে তিন সেমিস্টার পদ্ধতির লাগাম টানার উদ্যোগ নিয়েও অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে। কমিশন দুই সেমিস্টার পদ্ধতির নির্দেশনা দিয়ে এর আগে কয়েক দফা সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল। তবে এবার কমিশন এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আর নতুন যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোতে শুরু থেকেই দুই সেমিস্টার পদ্ধতি চালুর নির্দেশ দিয়েছে।
ইউজিসি একই সঙ্গে পূর্ণকালীন প্রোগ্রামে নূন্যতম চারটি কোর্স-সংবলিত বছরে দুই সেমিস্টার পদ্ধতি চালুর কথা বললেও একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চারটি কোর্স পড়ানোর জন্য ইউজিসির প্রস্তাবটি ভুল। ছয় মাসে একটি সেমিস্টার হলে প্রতি সেমিস্টারে কমপক্ষে ছয়টি কোর্স পড়াতে হবে। নইলে তো চার বছরে অনার্স শেষ হবে না। পাঁচ বছর লেগে যাবে।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ওমর ফারুখ বলেন, উন্নত দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে ‘স্প্রিং’ ও ‘ফল’ এ দুটি সেমিস্টার রয়েছে। আর আমাদের দেশে বছরে তিনটি স্প্রিং, ফল ও উইন্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। প্রতি চার মাসে একটি সেমিস্টার। একটি সেমিস্টারের পাঠ ভালোভাবে রপ্ত করার আগেই আরেকটি চলে আসে। এভাবে চাকরি বাজারে শিক্ষার্থীরা গিয়ে দক্ষতায় পিছিয়ে পড়ে।
Discussion about this post