নিজস্ব প্রতিবেদক
মহামারি করোনা সঙ্কটে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এরই মধ্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট সরকারকে হস্তান্তর করার কথা। এদিকে করোনা শনাক্তের এবং কিট উদ্ভাবনের সক্ষমতা রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি)। গত ২৯ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিশ্ববিদ্যালয়টির সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত করেন টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা। কিন্তু একমাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও সাড়া বা সমর্থন পাননি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা।
সরকার বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমর্থন এবং আর্থিক সহযোগিতা পেলে কিট উদ্ভাবন, ভাইরাস শনাক্তকরণে তারা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এ জন্যে তিনি গত ২৮ মার্চ করোনাভাইরাস রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করেন। এ কমিটির উদ্যোগে ইতোমধ্যে টেলিমেডিসিন এবং মেন্টাল হেল্প সেবা চলমান রয়েছে।
টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু অফিসিয়ালি এখন পর্যন্ত কোনও সাড়া পাইনি। এখন যে কিট তৈরি করা হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। পরবর্তী সময়ে কিটের সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিটের সংকট পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কমিটির সদস্য ও অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যা যা করার, তা আমরা করেছি কিন্তু এসব কাজ সমন্বয় করতে হয় সরকারের সঙ্গে। এ বিষয়ে সমন্বয় করে কাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে আমরা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে বলেছি যে, আমরা সরকার বা দেশকে সহযোগিতা করতে চাই। আমাদের সহযোগিতা যদি সরকার না নিতে চায়, তাহলে আমরা কী করতে পারি?
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাধারণ চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাসিলিটিজ তারা ব্যবহার করতে চায়। এরপর তৎক্ষণাৎ আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দ্রুত জানালাম যে, অবশ্যই এই সংকট কালে সরকার আমাদের থেকে যে ধরনের সহযোগিতা চাইবে তা আমরা করতে প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু এরপর এ বিষয়ে আর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে এ বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটির একজন সদস্য হিসেবে সরকারের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করে তাহলে আমরা জাতির সংকট কালে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কিট ইনোভেশন বা ডেভেলপমেন্ট এবং করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের সক্ষমতা আমাদের রয়েছে, যা গবেষণার বিষয়। আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমরা তা করতে পারবো বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। সরকার বা অন্য কেউ যদি সাপোর্ট করে, তাহলে আমাদের গবেষকরা সেটা করতে পারবে। আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা প্রস্তাবনাও তৈরি করেছে।
তিনি আরও বলেন, আগামীতেও এসব উদ্যোগের প্রয়োজন পড়বে। কারণ এটিই কেবল শেষ ভাইরাস না। এক্ষেত্রে গবেষণার ক্ষেত্র উন্মোচন করা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাড়ানো– এগুলো হয়তো করা লাগবে। এসব বিষয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এসব বিষয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের পরিকল্পনা শেয়ার করেছেন। শুধু তাই নয়, আমরা করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়ার পরের অবস্থা সম্পর্কেও ভাবছি।
Discussion about this post