খেলাধূলা ডেস্ক
সৌদি আরবের বিপক্ষে অঘটনের পর খেলার আগে সংবাদ সম্মেলনে মেসি বলেছিলেন, ‘আমরা ফিরে আসবো, আমাদের উপর আস্থা রাখুন, ভরসা রাখুন।’ আর্জেন্টিনা প্রেমীদের দেয়া সে কথা রেখেছেন মেসি। আজকের জয়ে নিজে অসাধারণ গোল তো করেছেনই, আবার এনজো ফার্নান্দেজকে দিয়ে করিয়েছেনও এক গোল। এমন এক ভরসাই তো খুঁজছিলেন তার ভক্ত সমর্থকরা।
মাঠে নেমেই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলায় ছুঁয়েছেন ম্যারাডোনাকে, প্রথমার্ধে সুযোগ না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে পেয়েছেন ছন্দ, দারুণ এক গোল করে গড়েছেন রেকর্ড, পরবর্তী গোলে অবদান রেখে জিতিয়েছেন দলকেও। আর্জেন্টিনার শেষ ষোলোয় যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন এই লিওনেল মেসিই।
এই ম্যাচে গোল করে মেসি গড়েছেন দারুণ এক রেকর্ডও। বিশ্বকাপে ৮ গোল করে দেশটির কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনোর পাশে নাম লেখিয়েছেন ৩৫ বয়সী এই ফুটবলার। এই তালিকায় সবার ওপরে থাকা গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার গোল সংখ্যা ১০।
শুরুতে ম্যাচে নেমে মেক্সিকোর বিপক্ষে যেনো খেই হারিয়ে ফেলে আর্জেন্টিনা। তাদের স্বভাব সুলভ যে খেলা তার বিন্দুমাত্র প্রদর্শন করতে পারছেন না মেসিরা। এমন ধারহীন খেলায় মাঠে অনেকটা বিমর্ষ ও বিরক্ত দেখা যাচ্ছিল আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিয়নেল মেসিকে।
যার ফলে উল্টো একের পর এক আক্রমণ করে যাচ্ছে মেক্সিকো। এমনকি একটি গোলও হজম করতে হতো আর্জেন্টিনাকে। যদি তাদের কিপার ত্রাতা হয়ে বলটা আটকাতে না পারতেন। এমন ম্যারম্যারে খেলায় গোল শূন্য ড্র দিয়েই বিরতিতে যায় দু’দল।
বল দখলে মেসিরা শুরু থেকে এগিয়ে থাকলেও প্রথমার্ধে একটিও গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। বরং মেসিদের থেকে উজ্জ্বল ছিল মেক্সিকো। ১৪ মিনিটে মাঝনাঠের বাইরে থেকে নেয়া মেক্সিকান ভেগার ফ্রি কিক থেকে বল ডিক্সের ভেতরে গেলেও আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সেটি আটকে দেন।
আগের ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে পোল্যান্ডের জয়ে এই ম্যাচে তাই জিততেই হবে আর্জেন্টিনাকে। ৩৩ নিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া মেসির ফ্রি কিক ওচোয়া পাঞ্চ করে ক্লিয়ার করেন৷ ৪০ মিনিটে কর্নার থেকে ডি মারিয়ার ক্রসে লাউতারো মার্টিনেজের হেড খুজে পায়নি গোলের দেখা।
খেলা শেষের এক মিনিট ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় মেক্সিকো। ভেগার দুর্দান্ত ফ্রি কিক ডান পাশে লাফিয়ে দুর্দান্তভাবে গ্লাভস বন্দী করেন এমি মার্টিনেজ। গোলশূন্য অবস্থাতেই বিরতিতে যায় দুই দল।
খেলার দ্বিতীয়ার্ধে সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল, কি হচ্ছে কি হবে এমন অবস্থা, কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিল না আলবিসেলেস্তেরা। যে গোল না পেলে বিদায়ের খুব কাছেই চলে যাবে দল। এমন সব মুহূর্তে আর্জেন্টিনা যার দিকে তাকিয়ে থাকে, আজও দৃষ্টি ছিল তার দিকেই। অবশেষে লিওনেল মেসিই করলেন মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই গোলটা। ৬৪ মিনিটে মেসির করা এই দৃষ্টি নন্দন গোলেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
এবার দৃষ্টিতে এনজো ফার্নান্দেজ। যেন নিখুঁত পায়ের মাপা শট। এক কিকে থার্ডবারে পরাস্ত মেক্সিকোর গোলকিপার। কিছু বুঝে উঠার আগেই ঝাঁঝালো শটের বল গেলো জালে। আর তার পরই উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো গ্যালারি।
খেলার দ্বিতীয়ার্ধের ঝলক দেখান এনজো ফার্নান্দেজ। তার গোলেই মূলত ব্যাকফুটে চলে যায় মেক্সিকো। মেসির বানিয়ে দেয়া পাসে ডি বক্সের বাইরে থেকে থার্ড বারে বল সুট করেন ফার্নান্দেজ, আর তাতেই ৮৭ মিনিটে কাজের কাজ দ্বিতীয় গোল হয়ে যায়। তাতেই জয়ের দেখা পায় আর্জেন্টিনা।
Discussion about this post