ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেও দেয়াল হলে দাঁড়ালেন লিভাকোভিচ। প্রথম শট নিতে আসে রদ্রিগো। তার শটটি ঠেকিয়ে দেন তিনি। মারকুইনসের শট গিয়ে লাগে সাইড বারে। ৪-২ গোলে জিতে সেমিতে যায় ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় ব্রাজিল।
এদিন ম্যাচের শুরুতে ব্রাজিলকে চাপে রাখার চেষ্টা করে ক্রোয়েশিয়া। প্রতিপক্ষকে স্পেস না দিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করে ক্রোটরা। ব্রাজিলের কোনও ফুটবলার বল ধরলেই ছেঁকে ধরেন তিন-চার জন।
১১ মিনিটে প্রতি আক্রমণে দারুণ এক সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। ডান দিক থেকে ক্রস করেছিলেন মদ্রিচ। কিন্তু ক্রসে পা ঠেকাতে পারেননি পেরিসিচ।
২০ মিনিটে পর পর দুটি আক্রমণ করে ব্রাজিল। প্রথমে ভিনিসিয়ুস পরে নেইমার। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ তা আটকে দেয়।
৪২ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে বক্সের সামান্য বাইরে ফাউল করা হয়। ফ্রিকিক পায় ব্রাজিল। নেইমারের পাস বিপক্ষ ফুটবলারের গায়ে লেগে হালকা ঘুরে গেলেও জমা পড়ে গোলকিপারের হাতে। গোলশূন্য বিরতিতে যায় উভয় দল।
বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক ব্রাজিল। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে ব্রাজিলকে বঞ্চিত করে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভাগ। ক্রোয়েশিয়ার এক ফুটবলারের হাতে বল লাগলেও রেফারি ভার-এর সঙ্গে পরামর্শ করে পেনাল্টি না দেওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিলেন। আক্রমণ বাড়াতে ৫৭ মিনিট রাফিনহাকে তুলে অ্যান্টনিকে নামান তিতে। নেমেই ডান দিকে পাস বাড়িয়েছিলেন তিনি। অল্পের জন্য গোল হয়নি।
৬৬ মিনিটে পাকুয়েতার শট বাঁচিয়ে দেন লিভাকোভিচ। গোলকিপারের মাথায় ওপর দিয়ে শট মারতে গিয়েছিলেন পাকুয়েতা। লিভাকোভিচের হাতে লেগে বল কর্নার হয়ে যায়।
৭৬ মিনিট আবারও গোলের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু এবারও ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ত্রাতা হয়ে উঠলেন। নেইমারের শট বাঁচিয়ে দেন লিভাকোভিচ।
৮০ মিনিটে আবারও দেয়াল হয়ে দাঁড়ালেন লিভাকোভিচ। অ্যান্টনির ক্রস পেয়েছিলেন রদ্রিগো। তার থেকে পাস পেয়েছিলেন পাকুয়েতা। তার শট আটকে দেন লিভাকোভিচ।
এডুকেশন স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ৯০ মিনিটেও যখন আলাদা করা যায়নি তখন খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়। নেইমারের গোলে অবশেষে ডেডলক ভাঙে ব্রাজিল। ১০৫ মিনিটে অপ্রতিরোধ্য থাকা ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচকে পরাস্ত করেন তিনি। লুকাস পাকেতার সঙ্গে ওয়ান-টু করার পর ডান প্রান্ত থেকে সুক্ষ্মকোণ দিয়ে বল জালে জড়ান নেইমার। এই গোলের মাধ্যমে কিংবদন্তি পেলেকে ছুলেন এই ফরোয়ার্ড। ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ৭৭ গোল নিয়ে পেলের সঙ্গে শীর্ষে আছেন তিনি। কিন্তু বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে পারেনি ব্রাজিল। গোলমুখে একটি মাত্র শট নিল ক্রোয়েশিয়া। আর তাতেই গোল। ১১৭ মিনিটে ওরসিচের পাস থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শটে জাল খুঁজে নেন পেতকোভিচ। তার গোলেই সমতা ফিরিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে ক্রোয়াটরা।
টাইব্রেকারে ব্রাজিলের হয়ে প্রথম শটটি নিতে এসেছিলেন রদ্রিগো। কিন্তু জালের ঠিকানা খুঁজে পাননি। বাঁ দিকে ঝাপিয়ে পড়ে তার শট ঠেকিয়ে দেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। পরে পেদ্রো ও কাসেমিরো গোলের দেখা পেলে ব্রাজিলের আশা কিছুটা বাড়তে। চতুর্থ শটটি পোস্টে লাগিয়ে ব্রাজিলের হেক্সা জয়ের অপেক্ষা আরো বাড়িয়ে দিলেন মার্কিনিয়োস। ২০ বছরেও ফুরোলো না সেই আক্ষেপ। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে চারটি শটের প্রতিটিতে গোল করেন নিকোলা ভ্লাসিচ, লাভ্রো মায়ের, লুকা মদ্রিচ ও মিসলাভ ওরসিচ। তাদের একজনের শটেও হাতের নাগাল পাননি ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক আলিসন বেকার।
Discussion about this post