খেলাধূলা ডেস্ক
ডমিনিক লিভাকোভিচ, বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, জাপানের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে টাইব্রেকার বীরত্বের আগে তার নাম জানতেন কেউ? উত্তর আসবে না।
সেই লিভাকোভিচের নাম না জেনে আর উপায় নেই, শেষ আটে ব্রাজিলের বিপক্ষে যা করলেন তাতে বিশ্বকাপ শেষে ক্লাব ফুটবলে তাকে নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ক্লাব ফুটবলে খেলেন ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব দিনামো জাগরেবে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যারা দেখে থাকেন তারা হয়তো চিনতে পারেন তাকে, কিন্তু এর বাইরে বিশ্বকাপের আগে কজনই বা চিনতো তাকে!
গোলরক্ষকদের ক্ষেত্রে বাজপাখি, চিল, ঈগল এসব উপমা বহুল ব্যবহারে ক্লিশে হয়ে গেছে। লিভাকোভিচের স্বভাবও আদতে এসবের কোনো কিছুর মতো নয়। টাইব্রেকারে একেকটি শট ফিরিয়ে তার নির্লিপ্ত মুখভঙি দেখে কে বলবে যে কেবলই নিজের দেশকে নিয়ে গেলেন পাহাড়চূড়ার আরেকটু কাছে!
শেষ ষোলোতে জাপানের বিপক্ষে টাইব্রেকারে ঠেকিয়েছিলেন তিনটি শট। শেষ আটে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচ টাইব্রেকারে নেওয়ার পেছনেও লিভাকোভিচের ভূমিকাই সব থেকে বেশি।
১২০ মিনিট খেলে ক্রোয়েশিয়ার গোলমুখে ১১ বার হানা দিয়েছে ব্রাজিল, ১০ বারই নেইমার-ভিনিশিয়ুস-রিচার্লিসনদের প্রবল বীরত্বে আটকে দিয়েছেন লিভাকোভিচ। তার এই সাহসিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়েই কিনা খাদের কিনারা থেকে ফিরে এসে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া।
টাইব্রেকারেও প্রতিপক্ষ দলে ছিলেন অনেকের মতেই বিশ্বের সেরা গোলকিপার অ্যালিসন, কিন্তু তাকেও টেক্কা দিয়ে যেভাবে জয় এনে দিলেন ক্রোয়েশিয়াকে, তাতে পৃথিবী এবং ক্রোয়েশিয়া যতদিন থাকবে, লিভাকোভিচের নাম উচ্চারিত হবে ততদিন।
রদ্রিগোর প্রথম শট লিভাকোভিচ ঠেকানোর সাথে সাথেই ভাগ্যের মোড় ঘুরে যায় ক্রোয়েশিয়ার দিকে। সেখান থেকে আর নিজেদের টেনে তুলতে পারেনি ব্রাজিল। ইতিহাস গড়ে ক্রোয়েশিয়া উঠে গেছে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে।
ডমিনিক লিভাকোভিচ, নিশ্চিত থাকুন, আপনার নাম এখন পুরো দুনিয়া জানে।
Discussion about this post