নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে ভুল স্বীকার করে সংশোধনী দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) । এই বছর ৩টি বিষয়ে মোট ৯টি ভুলের সংশোধনী দেয় এনসিটিবি।
সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রধান সম্পাদক সন্তোষ কুমার ঢালী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা বইতে তিনটি ভুল শনাক্ত করেছে এনসিটিবি। এর মধ্যে বইয়ের ১৮১ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে- ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নির্যাতন, গণহত্যা আর ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে।
কিন্তু প্রকৃত তথ্য হবে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী নির্যাতন, গণহত্যা আর ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে।
বইটির ২০০ তম পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে- ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হবে – ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
বইটির ২০২ নং পৃষ্ঠায় সংবিধান প্রণয়ন ১৯৭২ এর পটভূমি অংশের প্রথম অনুচ্ছেদের পরে যুক্ত হবে থাকলেও প্রকৃত তথ্য হচ্ছে
সংবিধান প্রণয়ন ১৯৭২ এর পটভূমি অংশের প্রথম অনুচ্ছেদের পর যুক্ত হবে-
সংবিধান প্রণয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছিল। সংবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর সার্বক্ষণিক দিক-নির্দেশনা ছিল। তিনি সংবিধান কমিটিকে বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে প্রত্যক্ষ নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
এছাড়া বইটির ২০৩ নং পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে পঞ্চমভাগে জাতীয় সংসদ কিন্তু প্রকৃত তথ্য হবে ষষ্ঠ লাইনে ‘পঞ্চমভাগে আইনসভা’।
এদিকে নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের ৬ নং পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ৫৪ সালের নির্বাচনে ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল চারটি হলো- আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম ও গণতন্ত্রী দল। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হচ্ছে ৫৪ সালের নির্বাচনে ৫টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল পাঁচটি বলো- আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম, গণতন্ত্রী দল ও পাকিস্তান খেলাফতে রব্বানী পার্টি।
বইটির ১৬ নং পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ ক্যাম্প ও পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প কিন্তু সংশোধিত তথ্য হবে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স ও পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর।
এদিকে বইটির ২৮ নং পৃষ্ঠায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ঠ্য। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হবে সাধারণ মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণ এ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
নবম-দশম শ্রেণির পৌরনীতি ও নাগরিকতা বইয়ের ৫৭ নং পৃষ্ঠায় ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কাজের ১ ক্রমিকের অনুচ্ছেদে প্রতিস্থাপিত হবে… ‘রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান। সরকারের সকল শাসনসংক্রান্ত কাজ তাঁর নামে পরিচালিত হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত তাঁর সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ পরিচালনা করেন। তিনি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীদের নিয়োগ করেন। রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের (মহা-হিসাবরক্ষক, রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা) নিয়োগের দায়িত্বও রাষ্ট্রপতির। প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত। তিন বাহিনীর (সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী) প্রধানদের তিনিই নিয়োগ দেন।
এছাড়া বইটির ৫৯ নং পৃষ্ঠায় ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কাজ-১ ক্রমিকের অনুচ্ছেদটি প্রতিস্থাপিত হবে… ‘প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের প্রধান। প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়। তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করেন ও মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করেন। তিনি যেকোনো মন্ত্রীকে তাঁর পদ থেকে অপসারণের পরামর্শ দিতে পারেন।
Discussion about this post