বিজ্ঞান ডেস্ক
বর্তমান সময়ে নিউরো—ইমেজিং ও আণবিক জীববিদ্যা (মলিকিউলার বায়োলজি) মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণায় অনেকদূর এগিয়েছে।
সম্প্রতি এর সাহায্যেই নতুন এক রহস্যের উন্মোচন করলেন একদল গবেষক।
রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ট্রান্সলেশনাল মেডিসিনের কো—ডাইরেক্টর ম্যাকেন নেদারগার্ড এবং কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেল্ড মলগার্ডের গবেষণাগারে এই পরীক্ষা করেন। পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে একদিকে যেমন মস্তিষ্কের গিলা নামক কোষটির কার্যকলাপ জানা গেছে, তেমনই অন্যদিকে মস্তিষ্ক থেকে বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের পদ্ধতিরও সন্ধান পাওয়া গেছে। মস্তিষ্কের এই বর্জ্য নিষ্কাশনের পদ্ধতিকে বিজ্ঞানীরা গ্লিমফ্যাটিক সিস্টেম নাম দিয়েছেন।
নেদারগার্ডের কথায়, একটি নতুন অ্যানাটমিক গঠনের খোঁজ মিলেছে, যা মস্তিষ্কের মধ্যে ও মস্তিষ্কের চারপাশে সেরিব্রোস্পাইনাল তরলের গতি নিয়ন্ত্রণ করে। জানা গেছে, সেরিব্রোস্পাইনাল তরল শুধুই মস্তিষ্ক থেকে বর্জ্য পদার্থ সরায় না। পাশাপাশি এটি সারা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও নিয়ন্ত্রণ করে।
এতদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের জানা ছিল, মস্তিষ্কের আবরণ পর্দার তিনটি স্তর। ডুরা, অ্যারাকনয়েড ও পায়া নামক তিনটি স্তরের মধ্যে এবার খোঁজ মিলেছে আরেকটি স্তরের। অ্যারাকনয়েড ও পায়া স্তরের মধ্যে থাকা চতুর্থ স্তরটির নাম রাখা হয়েছে সাবঅ্যারাকনয়েডাল লিম্ফ্যাটিক—লাইক মেমব্রেন (সংক্ষেপে এসএলওয়াইএম)।
এসএলওয়াইএম ফুসফুস ও হৃদপিন্ডের বাইরের আবরণেও রয়েছে। তবে সেটি মেসোথেলিয়াম নামে পরিচিত। এমন পর্দা মস্তিষ্কেও থাকতে পারে, এই ভাবনাতেই অধ্যাপক মলগার্ড শুরু করেন পরীক্ষানিরীক্ষা।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই পর্দাটি একেবারেই পাতলা। এর ফলে খুব সামান্য কিছু কোষই এর মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে পারে। মনে করা হচ্ছে, এই পর্দাই দূষিত ও বিশুদ্ধ রক্তকে আলাদা করে। মস্তিষ্কের বিভিন্ন সমস্যার সঙ্গে জড়িত টক্সিক প্রোটিন বাইরে বার করে দেয় এই বিশেষ পর্দা। এভাবেই গ্লিমফ্যাটিক প্রক্রিয়ায় বিশুদ্ধ হয়ে সেরিব্রো স্পাইনাল তরল মস্তিষ্কে প্রবেশ করে।
এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলো এসএলওয়াইএম—এর সাহায্যেই সংক্রমণ ও প্রদাহের খবর পায়। এভাবেই জীবন বাঁচায় মানুষের!
Discussion about this post