শিক্ষার আলো ডেস্ক
এবার ‘আদর্শ শিক্ষক’ সম্মাননা পেলেন তিন শিক্ষাবিদ। তারা হলেন-ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক, প্রতিভা মুৎসুদ্দি ও অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
আজ বুধবার (২৫ জানুয়ারি) এথিকস ক্লাব বাংলাদেশ-এর যুগপূর্তি, নৈতিকতা দিবসের আলোচনা, আদর্শ শিক্ষক সম্মাননা এবং প্রয়াত উপদেষ্টাদের স্মরণ অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক একজন পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে পদার্থ বিজ্ঞানের একমাত্র ইমেরিটাস অধ্যাপক। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন তিনি।
প্রতিভা মুৎসুদ্দি দেশের একজন শিক্ষাবিদ ও ভাষা সংগ্রামী। তিনি নির্যাতিত নিপীড়িত পিছিয়ে পড়া নারীদের সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামেও বিভিন্নভাবে যুক্ত রয়েছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন। ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি থেকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ পেয়েছিলেন তিনি।
“আলোকিত মানুষ চাই” শ্লোগানকে সামনে রেখে যে মানুষটি আলোকিত মানুষ গড়ার ব্রত নিয়েছেন তাঁকে আমরা সবাই চিনি। তিনি আমাদের সবার প্রিয় সায়ীদ স্যার— অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। দেশের একজন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক। তিনি ষাটের দশকে একজন প্রতিশ্রুতিশীল কবি হিসেবে পরিচিতি পান। সে সময়ে সমালোচক এবং সাহিত্য-সম্পাদক হিসেবেও তিনি অবদান রেখেছিলেন। তার জীবনের উল্লেখযোগ্য কীর্তি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, যা চল্লিশ বছর ধরে বাংলাদেশে ‘আলোকিত মানুষ’ তৈরির কাজে নিয়োজিত। ২০০৪ সালে তিনি রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বিস্তারে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৫ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০০৮ সালে অর্জন করেন পরিবেশ পদক। প্রবন্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭০-এর দশকে তিনি টিভি উপস্থাপক হিসেবে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
সব সমাজেই এমন কিছু মানুষ থাকেন সংখ্যায় যাঁরা অল্প; কিন্তু যাঁদের মধ্যে জ্ঞানের ব্যপ্তি, মূল্যবোধের বিকাশ, জীবনের উৎকর্ষ, আত্মমর্যাদার মহিমা— এ সবের বড় রকম বিকাশ ঘটে। এঁরা সেই ধরণের মানুষ, যাদের বেচা যায় না, কেনাও যায় না। সমাজের তরল স্রোত যাদের চার পাশ দিয়ে নিরন্তর প্রবাহিত হয়ে চলে; কিন্তু তারা এর মাঝ খানে থেকেও প্রবুদ্ধ বৃক্ষের মতো একটা জাতির ভারসাম্য সুস্থিত করে রাখেন।
Discussion about this post