নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শুরু হওয়া গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো যথাসময়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে না পারা। এটি চূড়ান্ত করতে মার্চ মাসের শুরুতে আবার সভা ডাকা হয়েছে।
আর এই সমস্যা উত্তরণে মার্চ মাস থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে চায় এ সংক্রান্ত আয়োজক কমিটিও।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক উপাচার্যরা জানান, গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে মার্চের শেষ দিকে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি চূড়ান্ত করতে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে বৈঠকে বসা হবে। এছাড়া এপ্রিলের শেষ দিকে অথবা মে মাসের শুরুর দিকে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
সভায় শিক্ষামন্ত্রী আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সেশন থেকে একটি গুচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তাব করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ করতে এ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও তিনি একটি ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা চান। প্রয়োজনে স্যাট (একজন শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য কতখানি তৈরি, তা এ পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা হয়ে থাকে)–এর মতো ব্যবস্থা তার সমাধান হতে পারে বলেও ইঙ্গিত করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে একটি পরীক্ষা হয়। সেখানে হয়তো গণিত, বিজ্ঞান বা ভাষা—এ জাতীয় বিষয় এবং সাধারণ জ্ঞানের ওপর পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের দেশে যারা এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষা দিচ্ছে, তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আবারও একই বিষয়ের ওপর পরীক্ষা দিচ্ছে। সেটি না করে ভাষা, গণিত, সাধারণ জ্ঞানের ওপর একটি পরীক্ষা হওয়া উচিত। আর যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটিতে যেতে পারছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত বিদ্যমান গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষা ব্যবস্থাপনাকে আরও ভালো করতে হবে।
সভায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় এখনো ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি। এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। আজকের বৈঠকে এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সমস্যাগুলো থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টাও করা হচ্ছে। গুচ্ছ নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, ক্লাস শুরু করতে অনেক সময় লাগছে। সেজন্য এবার জুলাই মাসের মধ্যে ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গুচ্ছ কমিটির সদস্যরা বলেছেন, জুলাই মাসে ক্লাস চালু করতে হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে শুরু করে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে। এজন্য মার্চের শেষ দিকে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এপ্রিলের শেষে অথবা মে মাসের শুরুতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহ্ আজম বলেন, আমরা জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু করতে চাই। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সবকিছু শেষ করতে হবে। শীঘ্রই সভা করে ভর্তি পরীক্ষার তারিখসহ যাবতীয় বিষয় চূড়ান্ত করা হবে।
Discussion about this post