নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবস ও বাংলার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে নগরীর পূর্ণাংগ ডিজিটাল স্কুল খ্যাত সাউথ এশিয়ান স্কুল । সকালে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।নির্ধারিত বিষয় ছিল “মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব”। এর আগে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতা।বিষয় ছিলো- `এসো মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ । এতে মহান এই জননেতার শৈশবকাল থেকে শুরু করে তাঁর সংগ্রামী জীবনের নানা ধাপ এর উপর প্রশ্নের উত্তর লিখে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা।
এরপর শুরু হয় শিশু দিবসের বিশেষ আলোচনা সভা। প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ লকিতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনজুমান আরা বেগম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী মো.নাজিমউদ্দিন, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সালেহউদ্দিন এবং সাংবাদিক এস, এম, পারভেজ । এছাড়াও সকল শ্রেণির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার শুরুতে পবিত্র কোরআন পাঠের পর তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী আফিফা মোবাররা রাইসার পরিবেশনায় কবি লুৎফর রহমান রিটনের ছড়া ‘মুজিব মুজিব ডাক পাড়ি’ সবাইকে মুগ্ধ করে।
স্বাগত বক্তব্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সালেহউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় শেখ মুজিবুর রহমানের অনবদ্য ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, শেখ মুজিব না হলে আজ বাংলাদেশ হতোনা! আর আমরা আজও পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর গোলাম হয়ে থাকতাম।তাই তাঁর প্রতি এই জাতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।
প্রধান অতিথি আনজুমান আরা বেগম বলেন, স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন মহামানব।সাহসে, সততায় , নেতৃত্বে ও মানবিকতায় তিনি ছিলেন অতুলনীয়। তাই তাঁর জীবনী অনুসরণ করে তোমাদেরও ছোটবেলা থেকেই সৎচরিত্র গঠন করতে হবে। মাবাবার কথামত চলা, নিয়মিত লেখাপড়া করা, দেশকে ভালবাসা, ন্যায়ের পথে থাকা এসব মেনে চললেই বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানানো হবে। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আগামী প্রজন্মের শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
বিশেষ অতিথি সাংবাদিক এস, এম, পারভেজ উপস্থিত শিশুকিশোরদের সামনে শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর প্রচন্ড ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু রাজনীতিবিদ, প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি যখন যে অবস্থায়ই ছিলেন শিশুদের যে কোন অনুষ্ঠানে তিনি হাজির হতেন, অসহায় শিশুদের তিনি নিজ হাতে খাওয়াতেন, উপহার দিতেন এবং লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দিতেন।শিশুদের সৃজনশীলতার বিকাশে ‘কচিকাঁচার আসর’ সংগঠনে পৃষ্ঠপোষকতাও করেন তিনি।শিশুদের খেলাধূলার প্রসারেও তিনি ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেন – এমন সব তথ্য তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে।
বিশেষ অতিথি মো.নাজিমউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর মত মহাননেতাকে জানতে হলে তাঁর উপর লেখা বই পাঠ করতে হবে। তিনি অভিভাবকবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা সন্তানদের হাতে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে দেন, যাতে তারা সততা ও ন্যায়ের আদর্শে জীবন গড়তে পারে এবং সোনার বাংলা গঠনে প্রকৃত ভূমিকা রাখতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ লকিতুল্লাহ বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকণ্ঠ ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জনগোষ্ঠিকে মুক্তি ও স্বাধীনতার পথ নির্দেশনা দিয়েছিল। আর কোন নেতার পক্ষে এত বড় ভুখন্ড স্বাধীন করা সম্ভব হয়নি। তাই তাঁর অবদান যেন কোন ভাবেই আমরা না ভুলি।
সভাশেষে কুইজ এবং চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানের সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সালেহউদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন শিক্ষিকা শামীমা নাসরীন।
Discussion about this post