নিউজ ডেস্ক
করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) আক্রান্তের চিকিৎসায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) স্থাপিত দেশের বৃহত্তম হাসপাতাল উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী সোমবার (৪ মে)।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে হাসপাতালটিতে পরিচালক পদায়ন করা হয়েছে।
উদ্বোধনকে সামনে রেখে বসুন্ধরা হাসপাতালে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের পরিচ্ছন্নতা ও সরঞ্জামাদি পরীক্ষার কাজ। স্থাপনের পর শেষ মুহূর্তের জন্য পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম ও বিদ্যুৎ সংযোগগুলো।
আজ শনিবার (২ মে) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আইসিসিবি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ আসবাবপত্র, সব ধরনের সরঞ্জাম বসানো হয়ে গেছে। আইসিইউ বাদে অন্যান্য সবকিছুই প্রস্তুত। আইইসিইউ থেকে কয়েকটি দিন সময় লাগবে। তবে এখন যে কোনো সময় রোগী আসলে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। বলা যায় হাসপাতাল প্রস্তুত।’
‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আগামী সোমবার (৪ মে) উদ্বোধনের কথা বলা হয়েছে। সেই হিসেবে রোগী আসতে দুই-একদিন বাকি আছে। এজন্য শেষবারের মতো সবকিছু পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখন চলছে মূলত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ’- বলেন জসীম উদ্দিন।
জসীম উদ্দিন আরো বলেন, ‘উদ্বোধনের তারিখকে সামনে রেখে আমরা একেবারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে, লাইনগুলো পরীক্ষা করে, এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ভালোভাবে মনিটরিং করে দিতে চাচ্ছি। সেই কাজগুলোই চলছে।’
হাসপাতালটি ৪ তারিখেই হস্তান্তর হবে কিনা- এমন প্রশ্নে আইসিসিবি’র এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কনফারমেশন এখনো পাইনি। আজ ২ তারিখ। যেহেতু এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু জানানো হয়নি, মনে হয় দুই-একদিন দেরিও হতে পারে।’
আইসিসিবিতে নির্মিত হাসপাতাল চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসক ও নার্স চেম্বারগুলোর কাজ শেষ। শয্যাগুলোতে বেডশিট, ডাস্টবিন, স্যালাইন হ্যাঙ্গারসহ আনুষঙ্গিক সাপোর্ট বসানো হয়েছে। টয়লেট নির্মাণও শেষ। হাসপাতালের এসি, চেয়ারসহ অন্যান্য কাজের ফিনিশিং শেষ। চালিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর অনুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন শয্যা হবে দুই হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে এক হাজার ৪৮৮টি শয্যা বসবে। এছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরো ৫২৫টি। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে হবে ৭১ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।
করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে দুই হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে, ততদিন হাসপাতালটি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে।
Discussion about this post